এরনাকুলাম, 22 জুলাই: ভেঙে যাওয়া বিয়েকে জোর করে টিকিয়ে রাখা যেমন নিষ্ঠুরতা, ঠিক তেমনই বিবাহবিচ্ছেদ ও তার আবেদনকে অস্বীকার করাও নিষ্ঠুরতা ৷ আজ কেরল হাইকোর্ট একটি মামলার রায়ে এমনই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে ৷ তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা এক মহিলা ফ্যামিলি কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন ৷ সেখানেই বিচারপতি রাজাবিজয় রাঘবন এবং বিচারপতি পিএম মনোজের বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন ৷
উল্লেখ্য, তিরবনন্তপুরমের এক মহিলা স্বামীর অত্যাচারের জেরে ফ্যামিলি কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন ৷ কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেন পরিবার আদালতের বিচারক ৷ এমনকি মহিলার অভিযুক্ত স্বামীও বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মানতে চাননি ৷ বরং স্ত্রীর সব অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেন ৷ এক্ষেত্রে নিম্ন আদালত তার রায়ে জানায়, মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে আনা অত্যাচারের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি ৷ আর সেই কারণে, বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয় ৷
এরপরেই কেরল হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ওই মহিলা ৷ সেখানে শুনানিতে নিম্ন আদালতের ভূমিকার সমালোচনাও করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালত তার মন্তব্যে নির্দিষ্ট করে যে, "ফ্যামিলি কোর্ট মহিলা এবং তাঁর মেয়ের বয়ানকে গ্রাহ্য করেনি ৷ দু’জনেই (মহিলা এবং তাঁর মেয়ে) এই বিয়েতে টিকে থাকতে পারছেন না ৷" এরপরেই আদালতের পর্যবেক্ষণ, "যদি, একটি বিবাহের সম্পর্ক থেকে একজন আলাদা হতে অস্বীকার করেন, তাহলে যিনি বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করছেন, তা তাঁর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলে গণ্য হবে ৷"
আদালত আরও উল্লেখ করেছে, "একটি অপরিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্ক বজায় রাখলে, তা ভালোর থেকে বেশি ক্ষতি করবে ৷" হাইকোর্টের মন্তব্য ছিল, "মানসিক যন্ত্রণার থেকেও বেশি, জোর করে কোনও সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখলে, তা দম্পতির জীবনের অগ্রগতিতেও বাধা সৃষ্টি করবে ৷" সব শেষে রায়দানের সময় আদালত ফ্যামিলি কোর্টের আবেদন খারিজের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিয়েছে ৷ ফলে মহিলার বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন গৃহীত হবে বলে জানিয়েছে আদালত ৷