নয়াদিল্লি, 7 জুন:পুলওয়ামা হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হোক কিংবা গালওয়ান প্রদেশে চিনা আগ্রাসন নীতির মোকাবিলা ৷ দেশের সুরক্ষার স্বার্থে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাহায্য করেছেন ৷ দীর্ঘ 10 বছর দায়িত্ব সামলানোর পর গত 3 জুন অবসর নিয়েছেন দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ৷ তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে দেশের সুরক্ষার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, এই মুহূর্তে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়েছে মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি ৷
সংশ্লিষ্ট দফতরের সূত্র ইটিভি ভারতকে জানিয়েছে, অবসরের পর এই শীর্ষ পদে আর থাকতে চান না ডোভাল ৷ আর সেই কথা তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ৷ তাঁর সেই সিদ্ধান্তের পর এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে বেজায় চিন্তায় পড়েছে কেন্দ্র ৷ সূত্রের দাবি, নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্য়ে বেশ কয়েকজনের নাম ঘোরাফেরা করছে ৷ তালিকায় রয়েছেন, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি এবং প্রাক্তন র প্রধান অলোক যোশী ৷ যদিও এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি ৷
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভূমিকা
একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাজ হল প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় নিরাপত্তা নীতি এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে উপদেশ দেওয়া ৷ ভারতের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক হুমকি এবং সুযোগ সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব এনএসএ-র। সরকারের পক্ষ থেকে কৌশলগত এবং সংবেদনশীল বিষয়গুলির তত্ত্বাবধান করাও একজন এনএসএ-র অন্যতম প্রধান কাজ । দেশের সমস্ত গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাবতীয় তথ্য নিয়ে সেগুলি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরাও কাজ তাঁর ৷
1998 সালের 19 নভেম্বর এই পদের সূচনা করা হয় ৷ মূলত ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস (আইএফএস) এবং ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার ভিত্তিতে এই পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় ৷ দেশের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন একসময় রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকা ব্রজেশ মিশ্র ৷ তাঁর পর সেই দায়িত্ব সামলেছেন আইএফএস আধিকারিক জেএন দীক্ষিত ৷ তারপর একে একে সেই দায়িত্বে এসেছেন এমকে নারায়ণ এবং শিবশঙ্কর মেনন ৷ 2014 সালে দিল্লির মসনদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসীন হওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্বের ভার এসে পড়ে অজিত ডোভালের কাঁধে ৷
ইরাকের তিরকিতে আটকে থাকা দেশের 46 জন নার্সকে ফিরিয়ে আনতে বড়সড় ভূমিকা পালন করেন 1968 সালের কেরল ক্যাডারের আপিএস আধিকারিক ডোভাল ৷ এরপর থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় একের পর এক মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন অজিত দোভাল ৷ 1999 সালে IC 814 হাইজ্যাকিংয়ের ঘটনার পর কান্দাহারে চার সদস্যের আলোচনাকারী দলে নেতৃত্ব দিয়েও ডোভাল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । পাকিস্তানে ভারতের 2016 সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল ডোভালের প্রতিরক্ষা কৌশলের আরও এক মাস্টারস্ট্রোক । 2019 সালের বালাকোট বিমান হামলার সময়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ।