গুয়াহাটি/আইজল, 29 মে: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির জনজীবন ৷ অতি প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসে আট রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন 36 জন ৷ ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত সড়ক ও রেল পরিষেবা ৷
মিজোরামে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছেন 27 জন ৷ এর মধ্যে খনিতে ধস নেমে মিজোরামের রাজধানী আইজলে প্রাণ হারিয়েছেন 21 জন, নিখোঁজ আরও 10 জন ৷ নাগাল্যান্ডে মারা গিয়েছেন 4 জন ৷ অসমে মৃতের সংখ্যা 3 ও মেঘালয়ে মৃত্যু হয়েছে 2 জনের ৷ বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটছে ৷ উপড়ে গিয়েছে একাধিক গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ৷ ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবাও ৷
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের লামডিং বিভাগের অধীনে নিউ হাফলং-জাটিঙ্গা লামপুর সেকশন এবং ডিটোকচেরা ইয়ার্ডের মধ্যে জল জমে থাকার কারণে বহু ট্রেন হয় বাতিল হয়েছে ৷ বেশ কিছু ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে ৷ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক ও পুলিশ জানিয়েছেন, আইজলের মেলথুম এবং হ্লিমেনের মধ্যবর্তী খনি অঞ্চল থেকে এখনও পর্যন্ত 21 জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ সকালে ধসের পরে আরও কয়েকজন এখনও ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে পড়েছেন।
অন্যদিকে জেলার সালেম, আইবাক, লুংসেই, কেলসিহ এবং ফলকাউনে ভূমিধসের ঘটনায় মারা গিয়েছেন 6 জন, নিখোঁজ বহু ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগে নাগাল্যান্ডে অন্ততপক্ষে 4 জন প্রাণ হারিয়েছেন ৷ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে 40টিরও বেশি বাড়ি । ফেক জেলার মেলুরি মহকুমার অন্তর্গত লারুরি গ্রামের কাছে নদীতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালকের ৷ দেওয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের ।
ওপার বাংলায় রেমালের বলি 10, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক বাড়ি
অসমের কামরুপ, কামরুপ (মেট্রো) এবং মরিগাঁও জেলায় তিনজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে ৷ আহতের সংখ্যা 17 ৷ অসমের স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এএসডিএমএ) দেওয়া তথ্য অনুসারে, সোনিতপুর জেলার ঢেকিয়াজুলিতে একটি স্কুলবাসের উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় 12 জন পড়ুয়া আহত হয়েছে। মরিগাঁওয়ে দুর্যোগের বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ৷ এএসডিএমএ আধিকারিকরা জানিয়েছেন বনগাইগাঁও, চিরাং, দাররাং, ধুবরি, হোজাই,কার্বি আংলং, কোঁকরাঝাড়, মরিগাঁও, নগাঁও, সোনিতপুর, দক্ষিণ সালমারায় প্রবল ঝড়ে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷
অন্যদিকে, মেঘালয়ে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে 2জনের প্রাণহানির খবর এসেছে ৷ পাশাপাশি আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে শতাধিক ৷ প্রায় 17টির বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ শিলং-মাওলাই বাইপাস এবং ওকল্যান্ডের বিভার রোডে ভূমিধসের কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন ৷ হড়পা বানের কারণে অচলাবস্থা দেখা গিয়েছে ল্যাংকাইর্ডিং, পিনথরবাহ, পোলো, সফুরলং এবং ডেমসেইয়ং এলাকায় ৷
ত্রিপুরাতেও গত 24 ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে ৷ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় 50 থেকে 60 কিলোমিটার ৷ ঘটনায় 470টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে 15টি রিলিফ ক্যাম্পে 750 জন মানুষক আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন ৷ রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানিয়েছেন গত 24 ঘন্টায়, রাজ্যে গড়ে 215.5 মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে ৷ যার মধ্যে উনাকোটি জেলায় সর্বোচ্চ 252.4 মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সাগরে নদীর বাঁধ উপচে এলাকায় ঢুকছে নদীর নোনা জল, আতঙ্কিত এলাকাবাসী