নয়াদিল্লি, 7 ফেব্রুয়ারি:বাংলাদেশের সঙ্গে সদর্থক, গঠনমূলক, এবং পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত ৷ শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ডেকে এই কথা আবারও জানাল সাউথ ব্লক ৷
বুধবার, 5 ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশের ধানমন্ডিতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক মুজিবুর রহমানের বাড়িতে তাণ্ডব, ভাঙচুর চলে ৷ পরদিন সকালে সেই ঐতিহাসিক বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ৷ এদিকে সেদিনই ভার্চুয়ালি বাংলাদেশবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতা দেন গণঅভ্যুত্থানের জেরে দেশছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তিনি তাঁর পৈতৃক বাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকারকে কড়া আক্রমণ করেন ৷ 5 অগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ৷
এদিকে তাঁর এই বক্তৃতার জন্য ভারতকেই দুষেছে বাংলাদেশ প্রশাসন ৷ 6 ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে চিঠি ধরায় ইউনুস সরকার ৷ এদিনই রাতে ভারত মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বাড়ি ভাঙার ঘটনাকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে উল্লেখ করে এবং এর কড়া নিন্দা করে বিবৃতি দেয় ৷
সেই বিবৃতির পাল্টা এদিন ফের আরেকটি বিবৃতি দেয় মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ৷ তাতে ফের ভারতকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ঢাকা ৷ এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ঢাকার হাইকমিশনারকে তলব করে বিদেশ মন্ত্রক ৷ বিষয়টি সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ৷
এক্স হ্যান্ডেলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে তিনি জানিয়েছেন, আজ, সাউথ ব্লকের পক্ষ থেকে 7 ফেব্রুয়ারি বিকেল 5টার সময় ভারতে বাংলাদেশের কার্যকরী হাইকমিশনার মহম্মদ নুরল ইসলামকে তলব করা হয়েছিল ৷ তাঁকে পরিষ্কার জানানো হয়েছে যে, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সদর্থক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক সুবিধের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী ৷ এর আগে সাম্প্রতিক হওয়া কয়েকটি উচ্চ-স্তরীয় বৈঠকে তাদের বারবার এই বার্তা দেওয়া হয়েছে ৷
বাংলাদেশের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রক জানায়, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশ প্রশাসন অবিরত ভারতকে নেতিবাচক ভাবে তুলে ধরছে ৷ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক ইস্য়ুগুলির জন্য ভারতকে দায়ী করছে ৷ প্রকৃত অর্থে এই বিবৃতিগুলির জন্য দায়ী বাংলাদেশের নিজের নেতিবাচক মানসিকতা ৷
শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক বলে, "প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মন্তব্যগুলি করছেন, তা তাঁর একান্তই নিজের ৷ এতে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই ৷ এভাবে ভারত সরকারের সঙ্গে সদর্থক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় থাকতে পারে না ৷ কিন্তু ভারত সরকার পারস্পরিক সুবিধেজনক সম্পর্কই গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা করে চলেছে ৷ আমরা আশা করি, বাংলাদেশও একই উদ্যোগ নেবে ৷