হাথরস, 3 নভেম্বর:নবম শ্রেণির এক পড়ুয়া দীর্ঘদিন ধরেই পেটে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বছর পনেরোর আদিত্যর আল্ট্রাসাউন্ড করতেই চিকিৎসকদের চোখ কপালে ওঠে ! কারণ, চিকিৎসকরা দেখেন, ওই কিশোরের পেটে ঘড়ির বেল্টের টুকরো, ব্লেডের টুকরো, পেরেক মিলিয়ে প্রায় 56টি ধাতব টুকরো রয়েছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত অস্ত্রোপচারের পরের দিন আদিত্যর মৃত্যু হয়।
বিচিত্র, চমকপ্রদ এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের হাথরস জেলায়। জানা গিয়েছে, হাথরস শহরের রত্নগর্ভা কলোনিতে বসবাসকারী সঞ্চেত শর্মার ছেলের সম্প্রতি পেটে ব্যথা এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা জানান, চিকিৎসার জন্য তখন তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, এখানে কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে জয়পুরের এসডিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে কয়েকদিন চিকিৎসার পর তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়।
কিন্তু, সমস্যা ফের বাড়তে শুরু করে ৷ যখন 25 অক্টোবর ওই কিশোরের ফের সমস্যা শুরু হয়, তখন তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার নাকের সিটি স্ক্যান করে একটি পিণ্ড খুঁজে পান চিকিৎসকরা ৷ ওই পিণ্ডটি অপারেশন করে বের করা হয়। কিন্তু, এর পরেও পেটের সমস্যা একই রয়ে গেল।
কিশোরের পরিবারের সদস্যরা জানান, 26 অক্টোবর একটি বেসরকারি আল্ট্রাসাউন্ড সেন্টারে আদিত্যর পেটের আল্ট্রাসাউন্ড করা হয় এবং তাতে 19টি জিনিস দেখতে পাওয়া যায়। এর পরই এখানকার চিকিৎসক আদিত্যকে রেফার করেন নয়ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এরপর তাকে সেখানে নিয়েও যাওয়া হয়। এখানে আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্টে তার পেটে প্রায় 56টি জিনিস দেখা যায় ৷ এরপর আদিত্যকে তার পরিবার দিল্লির সফদরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে আল্ট্রাসাউন্ড করার পরেও একই রিপোর্ট মেলে। এরপর 27 অক্টোবর তার অস্ত্রোপচার হয়। সমস্ত জিনিস সরিয়ে তার পেট পুরোপুরি পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত অস্ত্রোপচারের পরের দিন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় 28 অক্টোবর রাতে আদিত্যর মৃত্যু হয়।
আদিত্যর পরিবারের দাবি, 19 অক্টোবর আলিগড়ে করা আল্ট্রাসাউন্ডে তার পেটে 19টি জিনিস পাওয়া যায়। এরপর দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে যখন তার পেটের আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়, তখন 42টি জিনিস দেখা যায় এবং এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা পর যখন আবার দিল্লির সফদরগঞ্জে আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়, তখন আদিত্যর পেটে 56টি জিনিস দেখা যায় ৷ এবার প্রশ্ন হল, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আদিত্যর পেটে থাকা জিনিসের সংখ্যা বাড়ল কী করে ? এই নিয়ে আদিত্যর পরিবারের সদস্যদের মতো কিছুটা হলেও ধোঁয়াশায় রয়েছেন চিকিৎসকরাও ৷