বলাঙ্গির (ওড়িশা), 6 ফেব্রুয়ারি: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু’কে চিঠি লিখে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন বরখাস্ত সিআরপিএফ জওয়ানের ৷ বলাঙ্গির জেলার তালপালি পাড়া গ্রামের সুধীর দাস 2008 সালে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীতে (CRPF) নিযুক্ত হন । চাকরিতে যোগদানের দু’বছর পর 2010 সালে, তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনা হয় ৷ ঘটনায় গ্রেফতার হন সুধীর । বিভাগীয় তদন্তে তিনি চাকরিও হারান ।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর 2018 সালে, বলাঙ্গিরের জেএমএফসি আদালত তাঁকে মুক্তি দেয়। পরে তিনি সিআরপিএফে পুনঃনিয়োগের জন্য আবেদন করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন । গত বছরের 20 নভেম্বর ওড়িশা হাইকোর্ট রায় পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তাঁকে ‘চাকরি থেকে বরখাস্তের মতো কঠোর শাস্তি’ না-দেওয়ার নির্দেশ দেয় । সুধীরের অভিযোগ, আদালতের আদেশের 90 দিন পরেও সিআরপিএফ তা বাস্তবায়ন করেনি ।
14 বছরের আইনি লড়াই:
14 বছরের আইনি লড়াইয়ের পর আদালত তাঁকে মুক্তি দেয়। সুধীরের অভিযোগ, সিআরপিএফ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করছে না । ফলে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ইচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চেয়ে চিঠি লিখেছেন । শুধু তাই নয়, সুধীর জানিয়েছেন কোনও ফল না-পেলে 2 মার্চ রাজ্যপালের বাসভবনের সামনে তাঁর পরিবারের সঙ্গে আত্মহত্যা করবেন ।
![Dismissed CRPF jawan requests President for euthanasia](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/06-02-2025/23483365_court_0602newsroom_1738824262_966.jpg)
সুধীর বলেন, ‘‘সেই সময় আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল । আমি 14 বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি । মামলা লড়তে আমি বাড়ির সমস্ত কিছু বিক্রি করে দিয়েছি । শেষ পর্যন্ত আদালতে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি ৷ এখন আমি কীভাবে বাঁচব ? এখন আর কোনও উপায় নেই । আমি রাষ্ট্রপতির কাছে ইচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চেয়েছি । নচেৎ 2 মার্চ, আমি ওড়িশা রাজভবনের সামনে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহত্যা করব ।’’
সুধীরের স্ত্রী নমিতা ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আমার স্বামী একটি ভুয়ো মামলায় চাকরি হারিয়েছেন। ন্যায়বিচারের জন্য আমরা বাড়ির সব টাকা, গয়না এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছি । আদালত তাঁকে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছে । কিন্তু তাকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না । এই পরিস্থিতিতে আমরা আর লড়াই করতে পারছি না ।’’
মামলাটি তদন্ত করেছিলেন তৎকালীন সিআরপিএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট বিষণ সিং। তাঁর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুধীর দাসকে 8 অক্টোবর, 2010 সালে একটি প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার করা হয় । তিনি ওই বছর 12 ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলে ছিলেন । সুধীর দাস অক্টোবরের 25 তারিখ পর্যন্ত সিআরপিএফে কর্মরত ছিলেন । তিনি আর্থিক তছরূপের ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন । যা 1949 সালের সিআরপিএফ আইনের ধারা 11(1) এবং 1955 সালের আইনের ধারা 27 অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।