শ্রীনগর, 6 জানুয়ারি:ঘরের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু বাবা-মা ও তিন সন্তানের ৷ যার মধ্যে এক সন্তানের বয়স মাত্র 28 দিন ৷ রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে ৷ গৃহকর্তার নাম আজাজ আহমেদ ভাট ৷ তিনি শ্রীনগরের ললিত গ্র্যান্ড প্যালেসে বেসরকারি হোটেলে শেফ হিসেবে কাজ করতেন ৷ তারা মূলত উপত্যকার বারামুল্লা জেলার উরি তহসিলের বাসিন্দা ৷ কিন্তু তারা শ্রীনগরের উপকণ্ঠে পান্দ্রাথানে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ।
এই বিষয়ে বাড়ির মালিক মুখতার আহমেদ বলেন, "ওনারা দু'মাস আগে ভাড়া এসেছেন ৷ মৃত আজাজের মা আমাকে ফোন করে জানান তিনি বিকেল 4টে থেকে ছেলেকে ফোনে পাচ্ছেন না ৷ এরপর আমি আবাসনে গিয়ে দেখে আসি ৷ দরজায় ধাক্কা দিলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি ৷ দরজা ধাক্কা দিয়ে খোলা হলে ভাট, তাঁর স্ত্রী এবং তিন নাবালক শিশুকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ।"
সরকারি এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘর গরম করার জন্য হিটার চালিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ওই দম্পতি ৷ তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে । দেহগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজ শ্রীনগরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৷ তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তীব্র ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে কাশ্মীরের লোকেরা ঘরের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য রুম হিটার ব্যবহার করে ৷ তবে সেগুলি যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে ঘরের ভিতরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়ে কার্বন মনোক্সাইড বৃদ্ধি পায় ৷ সুতরাং এই ধরনের কিছু চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে ৷ গত কয়েকদিনে উপত্যকায় এটি দ্বিতীয় ঘটনা । এর আগে, বারামুল্লা জেলার তাংমার্গ এলাকায় টিন-শেড পুড়ে যাওয়ায় দুই নাবালকের মৃত্যু হয়।
এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ কাশ্মীরের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডঃ আরশেদ ট্রাগ, শীতকালে দায়িত্বশীলভাবে ঘর গরম করার গ্যাজেটগুলি ব্যবহার করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি নিম্নলিখিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন :
ঘরে সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন : নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছাড়া বন্ধ ঘরে গ্যাস বা কেরোসিন হিটার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন ৷ কারণ এটি কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে ।