পিটিএসডি কী? ডা. বীণা কৃষ্ণণ জানিয়েছেন, “পিটিএসডি হল মূলত একটি সাইকোলজিক্যাল ট্রমা যার মধ্যে দিয়ে কাউকে যেতে হয় জীবনকালে ঘটা কোনও ঘটনার জেরে । আক্রান্তের জন্য এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এর কারণ হতে পারে কোনও শারীরিক আঘাত, যৌন হিংসা, প্রিয় কারও মৃত্যু কিংবা জীবনহানির আশঙ্কা প্রভৃতি ঘটনা, যা কারও জীবনে ঘটেছে বা কেউ তার সাক্ষী থেকেছে ।” এই ধরনের ঘটনা জীবন বদলে দেয় এবং কোনও মানুষের মস্তিষ্ক এইসব ক্ষেত্রে অন্য রকমভাবেও প্রতিক্রিয়া দিতে পারে । এর কিছু কিছু উপসর্গ, আমাদের বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন –
- কেউ অল্পেই বিরক্ত হয়ে পড়তে পারে বা তার কোনও কিছুতে মনোনিবেশ করতে সমস্যা হয় ।
- সেই পুরুষ/মহিলা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, মেলামেশা বন্ধ হয়ে যায় ।
- যে ঘটনার জেরে এই পরিণতি, তা নিয়ে কথা বলা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া ।
- ঘুম, খিদে আর তৃষ্ণা কমে যাওয়া ।
- অপরাধবোধ, লজ্জা এবং উদ্বেগে ভোগা ।
- নেতিবাচক মনোভাব রাখা এবং ছোট ছোট জিনিসে বিরক্ত হয়ে পড়া ।
- ঘুমোতে সমস্যা হওয়া
প্রধান উপসর্গগুলি হল ট্রমার দুঃসহ স্মৃতি বার বার ফিরে আসা, দুঃস্বপ্ন দেখা, আদের ঘটনা মনে পড়া, যা মস্তিষ্কের ভারসাম্য হানি করে । তাছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে সেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত জায়গা ও মানুষদের এড়িয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে পড়া প্রভৃতিও ।
কীভাবে কোভিড–19 পিটিএসডি–র সঙ্গে যুক্ত?
ডা. কৃষ্ণণের মতে, কোভিড–19 প্যানডেমিক নিজের সঙ্গে বহু অনিশ্চয়তা বয়ে নিয়ে আসে । আর যখনই কোথাও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে অস্থির হতে শুরু করি, ভয় জন্মাতে শুরু করে । সেই ভয়ের কারণে হৃদগতি বেড়ে যায়, পালস বাড়ে, রক্তচাপ বাড়ে, হাতের চেটো ঘামতে থাকে প্রভৃতি নানা উপসর্গ দেখা দেয় । আমাদের অটোনোমিক নার্ভাস সিস্টেম এতে সাড়া দেয় । প্যানডেমিকের সময়, আমরা যখন বহু মানুষের মৃত্যু দেখেছি, বহু মানুষকে কোয়ারানটিনে যেতে দেখেছি এবং আমাদের প্রিয় মানুষদের এর কবলে পড়ে কষ্ট পেতে দেখেছি, তখন আমাদের মস্তিষ্কও সতর্ক হয়ে গিয়েছিল ।