মালদা, 24 জুন: কথায় বলে কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টা থাকলে সমস্ত বাধা জয় করা যায় ৷ যার অন্যতম উদাহরণ অল ইন্ডিয়া জেইই-তে 1910 র্যাংক (এসসি) করা মালদার অভিজিৎ রায় ৷ এবার সে আইআইটি খড়গপুরে কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ পেয়েছে ৷ মালাদার অভিজিৎ-এর লড়াই শুরু হয়েছিল 15 বছর আগে ৷ খড়গপুর আইআইটি-তে পড়ার সুযোগ আজ যেন তাঁর সমস্ত কষ্ট মুছে দিয়েছে ৷
মালদার ইংরেজবাজার পৌরসভার 7 নম্বর ওয়ার্ডের গ্রিনপার্ক এলাকার বাসিন্দা অভিজিৎ ৷ বাবা মদন রায় 15 বছর আগে পরিবারকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন ৷ ছোট বোনের জন্ম দেওয়ার পর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন মা ৷ দাদু রতন হালদার টোটো চালিয়ে নাতি-নাতনিকে বড় করার দায়িত্ব নিয়েছেন ৷ মালদা টাউন হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর অল ইন্ডিয়া জেইই-র প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন অভিজিৎ ৷
অভিজিৎ বলেন, "অ্যাডভান্স জেইইতে পরীক্ষা দিয়ে এসসি-তে 1910 র্যাংক করে, আইআইটি খগড়পুরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সুযোগ পেয়েছি ৷ টাকার জন্য ভর্তি হতেও সমস্যা হচ্ছিল ৷ মালদার একটি ক্লাব সিট রিজার্ভের ব্যবস্থা করেছে ৷" অভিজিৎ-এর সাফল্যে তাঁর শিক্ষক মিঠুন মণ্ডল জানান, সপ্তম শ্রেণি থেকে অভিজিৎ আমার কাছে পড়ে ৷ টিউশন পড়া দূরের কথা, ওরা আর্থিকভাবে এতটাই দূর্বল যে, বই কেনারও ক্ষমতা ছিল না ৷ স্কুলের শিক্ষকরা সবাই ওকে স্পেসিমেন কপি বই সাহায্য করেছি ৷ এইভাবে পড়াশোনা করেই ও এত দূর এগিয়েছে ৷ আগামিদিনে ওর প্রয়োজনে সবসময় পাশে থাকব ৷ পড়োশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবকরম সাহায্য করব ৷"
জেইই-এর মতো কঠিন পরীক্ষায় প্রথমবারে সাফল্য না-মিললেও হাল ছাড়েননি তিনি ৷ স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় প্রস্তুতি চালিয়ে যান ৷ অবশেষে 9 জুন ফলপ্রকাশ হতেই দেখা যায় সর্বভারতীয় স্তরে এসসি তালিকায় 1910 র্যাংক করেছেন অভিজিৎ ৷ কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ মেলে আইআইটি খড়গপুরে ৷ অভিজিৎ-কে সাহায্য করেছেন স্থানীয়রাও ৷ ইতিমধ্যেই স্থানীয় একটি ক্লাবের সহায়তায় 17 হাজার 500 টাকা দিয়ে আইআইটি খগড়পুরে সিট রিজার্ভের ব্যবস্থা করেছে ৷ নাতির সাফল্যে খুশি দাদু রতন হলাদাল জানান, তিনি অনেক পরিশ্রম করে টোটো চালিয় নাতির পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন ৷ সেই পরিশ্রম আজ সার্থক হয়েছে ৷ সাফল্যের পর অভিজিতে সঙ্গে এদিন দেখা করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷