শান্তিনিকেতন, 9 জানুয়ারি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে পুনরায় রাস্তা নিজেদের হেপাজতে ফেরত চাইল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। 380 জন আধিকারিক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকার স্বাক্ষর করা একটি চিঠি পাঠানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তা তাঁদের কাছ থেকে নিজেদের হেপাজতে ফিরিয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই রাস্তার দু'পাশে বহু ঐতিহ্যবাহী ভবন ও ভাস্কর্য রয়েছে। সেই ভাস্কর্যগুলি ভারি যান চলাচলে কম্পনের ফলে নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চিঠিতে আশ্বাস দিয়েছে , এই রাস্তা জনসাধারণের জন্য কখনও বন্ধ করা হবে না।
2016 সালে তৎকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্য স্বপনকুমার দত্ত উপাসনাগৃহের সামনে দিয়ে যাওয়া রাস্তাটি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন। আবেদনের ভিত্তিতে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, অভিযোগ এই রাস্তা দিয়ে অধিকাংশ সময় সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে দেওয়া হয় না। এই মর্মে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানান। চিঠির প্রেক্ষিতে বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক এসে পুনরায় রাস্তাটি নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুনরায় রাস্তা চেয়ে এদিন ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলা মৌন অবস্থানে বসেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, আধিকারিকদের একাংশ।
ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুনরায় রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি
বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তা পুনরায় ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন । এরপর ঐতিহ্যবাহী উপাসনাগৃহ, রবীন্দ্রভবন, কলাভবন প্রভৃতির সামনে দিয়ে যাওয়া রাস্তা নিজেদের হেপাজতে নিয়ে নেয় রাজ্য সরকার। পূর্ত দপ্তরের তরফে বোর্ড লাগিয়ে রাস্তার দ্বারোদ্ঘাটনও করা হয়। এমনকি ওই রাস্তার উপর বক্স বাজিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে পূর্ত বিভাগ। এই নিয়ে জলঘোলা হয় ৷ তারপর আজ সেই রাস্তা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷
![ভাস্কর্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুনরায় রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি Visva-Bharati authorities sent a letter to cm](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/768-512-10178687-603-10178687-1610193474345.jpg)
আরও পড়ুন : বিশ্বভারতীতে তৃণমূলের মিছিলের প্রতিবাদে এবার পথে নামল বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেল
প্রসঙ্গত, এই রাস্তার দুই ধারে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রভবন, কলাভবন, সংগীত ভবন মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলি। এছাড়া, রয়েছে একাধিক অমূল্য ভাস্কর্য। এই রাস্তাদিয়ে ভারী যান চলাচল করলে এই ভবন ও ভাস্কর্যগুলি কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই মর্মে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় রাস্তাটি চেয়ে চিঠি দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে "প্রিয় দিদি" বলে সম্মোধন করা হয়েছে। এছাড়া, বিশ্বভারতী তরফে জানানো হয়েছে, এই রাস্তা সর্বসাধারণের জন্য কখনই বন্ধ করা হবে না। চিঠিতে প্রায় 380 জন আধিকারিক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা স্বাক্ষর করেছেন। যদিও, বীরভূম জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, "রাস্তা রাজ্য সরকার হেপাজতে নিলেও এই রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি কখনই চলাচল করতে দেওয়া হবে না।"