ETV Bharat / travel

ভিড় এড়িয়ে চলে আসুন প্রকৃতির কোলে, বড়দিঘির চা বাগানই হোক আপনার 'ডিয়ার ডেস্টিনেশন' - ভিড় এড়িয়ে চলে আসুন প্রকৃতির কোলে

Travel Destination: বেড়াতে যেতে পারেন কোথায়, তার হদিশ দেব আমরা ৷ স্বল্প সময়ে এই জায়গাগুলি হতে পারে আপনাদের 'ডিয়ার ডেস্টিনেশন' ৷ ভিড় এড়িয়ে চলে আসুন প্রকৃতির কোলে ৷ পরিবার নিয়ে কয়েকদিন কাটিয়ে আসুন জলপাইগুড়ির কাছে এই হেরিটেজ বাংলো বাড়িতে ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 26, 2024, 10:48 PM IST

জলপাইগুড়ি, 26 জানুয়ারি: সবে বছর শুরু হয়েছে ৷ লম্বা ছুটি নাৃ-নিয়ে বেড়িয়েই আসতে পারেন কাছেপিঠে কোথাও ৷ নিরিবিলি প্রকৃতির কোলে বসে ওলটাতে পারেন ইতিহাসের পাতা ৷ ইতিহাস ভালবাসলে এই জায়গা আপনার কাছে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা হতেই পারে ৷ জলপাইগুড়ির গরুমারা উদ্যানের একদম বিপরীতে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হেরিটেজ বাংলোতে এবার রাত্রিনিবাস করতে পারবেন আপনিও ৷

বর্তমানে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বড়দিঘি চা বাগানের বড় বাংলো। চা বাগানের শতাব্দী প্রাচীন হেরিটেজ বাংলো গতবছর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য ৷ এখানে পর্যটকরা এলে শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে থাকার সুবিধা যেমন পাবেন, তেমনি চা বাগানের চা পাতা তোলা থেকে শুরু করে কীভাবে তৈরী হয়, তাও হাতে কলমে দেখানো হবে পর্যটকদের ৷ জানা গিয়েছে, 1858 সালে ভাইসরয় থাকাকালীন লর্ড ক্যানিং এসেছিলেন এই বাংলোতে। সে সময় ট্রেভার ছিলেন বড়দিঘি চা বাগানের ম্যানেজার। ইতিহাস বিজরিত এই বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ 'বড়া বাংলো'র পাশেই রয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যান। পাশেই বয়ে গিয়েছে মূর্তি নদী।

বড়দিঘি চা বাগানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রোহিত পারিখ বলেন, "এই হেরিটেজ বাংলোতে থেকেছেন ভাইসর‍য় লর্ড ক্যানিং। আমাদের কাছে প্রচুর মানুষ এই হেরিটেজ বাংলোতে থাকার জন্য জানতে চেয়েছেন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আমরা। বাংলোতে 6টি ঘর রয়েছে। পর্যটকরা এলে আদিবাসী নৃত্য থেকে শুরু করে তাঁদের সব ধরনের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। একসঙ্গে অনেকে গ্রুপে এলে পিকনিক করার সুবিধা করে দেওয়া হয়।"

রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজবিন্দর সিং বলেন, "রাজ্য সরকারের চা ও পর্যটন শিল্প নীতিকে কাজে লাগিয়েই আমরা বাগানে চা ও পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছি। অনেকের শহরের কোলাহল থেকে একটু নিশ্চিন্তে থাকতে পছন্দ করেন ৷ তাই আমরা রাজ্য সরকারের টি-ট্যুরিজম প্রকল্পের মধ্যে এই হেরিটেজ বাংলোটিকে রেখেছি। নিরিবিলিতে হেরিটেজ বাংলোতে থাকতে পারবেন পর্যটকরা। পর্যটকদের জন্য সুইমিং পুলেরও ব্যবস্থা করা রয়েছে ৷"

বড়দিঘি চা বাগানে বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠির 'শের দিল' থেকে শুরু করে বাংলার 'বোমকেশ বক্সি'র সিনেমার শুটিং হয়েছে ৷ রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের এই বড়দিঘি চা বাগান স্থাপিত হয়েছে 1841 সালে ৷ 619 হেক্টর জমির উপর তৈরি হয়েছে এই চা বাগান ৷ ব্রিটিশ আমলের ভিজিটিং অ্যাডভাইসাররা আসলে এই বাগান বাড়িতেই উঠতেন ৷ এই বাংলোয় লন্ডনের ষ্ট্যাণ্ড ফ্যান, শিকাগোর টেলিফোন থেকে শুরু করে ব্রিটিশ সাহেবদের খাবার পরিবেশন করার রুপোর চামচ আজও ব্যবহার করা হয় ৷

শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি শহর থেকে বাসে করে ছাত্র-ছাত্রী ও পর্যটকদের বড়দিঘি চা বাগানে নিয়ে যাওয়া হবে। শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে ব্রেকফাস্ট করিয়েই ঘুরে দেখানো হবে চা ফ্যাক্টরি ৷ তারপর তাঁদের গজলডোবার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে বলে এমন উদ্যোগের কথা জানান জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু ।

কীভাবে যাবেন ?

বিমানে গেলে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নামতে হবে ৷ সেখান থেকে সড়কপথে ক্রান্তি হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানে ৷ যদি ট্রেনে যান তাহলে মালবাজারে নেমে পড়ুন ৷ সেখান থেকে গাড়ি করে চালসা হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ বাংলো বাড়িতে ৷ যাওয়ার আগে অবশ্যই রুম বুক করে যাবেন ৷ অনলাইনে সার্চ করলেই এই বাগান বাড়ির নম্বর পেয়ে যাবেন ৷ ফোন করে নিয়ে নিতে পারেন যাবতীয় তথ্য ৷

আরও পড়ুন:

  1. ডুয়ার্স মানেই চা বাগান আর লাভার জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া
  2. রক ক্লাইম্বিং, রাতে ক্যাম্প ফায়ার; ভ্রমণের নয়া ডেস্টিনেশন পাশাবং

জলপাইগুড়ি, 26 জানুয়ারি: সবে বছর শুরু হয়েছে ৷ লম্বা ছুটি নাৃ-নিয়ে বেড়িয়েই আসতে পারেন কাছেপিঠে কোথাও ৷ নিরিবিলি প্রকৃতির কোলে বসে ওলটাতে পারেন ইতিহাসের পাতা ৷ ইতিহাস ভালবাসলে এই জায়গা আপনার কাছে ভ্রমণের আদর্শ জায়গা হতেই পারে ৷ জলপাইগুড়ির গরুমারা উদ্যানের একদম বিপরীতে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হেরিটেজ বাংলোতে এবার রাত্রিনিবাস করতে পারবেন আপনিও ৷

বর্তমানে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বড়দিঘি চা বাগানের বড় বাংলো। চা বাগানের শতাব্দী প্রাচীন হেরিটেজ বাংলো গতবছর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য ৷ এখানে পর্যটকরা এলে শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে থাকার সুবিধা যেমন পাবেন, তেমনি চা বাগানের চা পাতা তোলা থেকে শুরু করে কীভাবে তৈরী হয়, তাও হাতে কলমে দেখানো হবে পর্যটকদের ৷ জানা গিয়েছে, 1858 সালে ভাইসরয় থাকাকালীন লর্ড ক্যানিং এসেছিলেন এই বাংলোতে। সে সময় ট্রেভার ছিলেন বড়দিঘি চা বাগানের ম্যানেজার। ইতিহাস বিজরিত এই বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ 'বড়া বাংলো'র পাশেই রয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যান। পাশেই বয়ে গিয়েছে মূর্তি নদী।

বড়দিঘি চা বাগানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রোহিত পারিখ বলেন, "এই হেরিটেজ বাংলোতে থেকেছেন ভাইসর‍য় লর্ড ক্যানিং। আমাদের কাছে প্রচুর মানুষ এই হেরিটেজ বাংলোতে থাকার জন্য জানতে চেয়েছেন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আমরা। বাংলোতে 6টি ঘর রয়েছে। পর্যটকরা এলে আদিবাসী নৃত্য থেকে শুরু করে তাঁদের সব ধরনের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। একসঙ্গে অনেকে গ্রুপে এলে পিকনিক করার সুবিধা করে দেওয়া হয়।"

রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজবিন্দর সিং বলেন, "রাজ্য সরকারের চা ও পর্যটন শিল্প নীতিকে কাজে লাগিয়েই আমরা বাগানে চা ও পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছি। অনেকের শহরের কোলাহল থেকে একটু নিশ্চিন্তে থাকতে পছন্দ করেন ৷ তাই আমরা রাজ্য সরকারের টি-ট্যুরিজম প্রকল্পের মধ্যে এই হেরিটেজ বাংলোটিকে রেখেছি। নিরিবিলিতে হেরিটেজ বাংলোতে থাকতে পারবেন পর্যটকরা। পর্যটকদের জন্য সুইমিং পুলেরও ব্যবস্থা করা রয়েছে ৷"

বড়দিঘি চা বাগানে বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠির 'শের দিল' থেকে শুরু করে বাংলার 'বোমকেশ বক্সি'র সিনেমার শুটিং হয়েছে ৷ রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের এই বড়দিঘি চা বাগান স্থাপিত হয়েছে 1841 সালে ৷ 619 হেক্টর জমির উপর তৈরি হয়েছে এই চা বাগান ৷ ব্রিটিশ আমলের ভিজিটিং অ্যাডভাইসাররা আসলে এই বাগান বাড়িতেই উঠতেন ৷ এই বাংলোয় লন্ডনের ষ্ট্যাণ্ড ফ্যান, শিকাগোর টেলিফোন থেকে শুরু করে ব্রিটিশ সাহেবদের খাবার পরিবেশন করার রুপোর চামচ আজও ব্যবহার করা হয় ৷

শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি শহর থেকে বাসে করে ছাত্র-ছাত্রী ও পর্যটকদের বড়দিঘি চা বাগানে নিয়ে যাওয়া হবে। শতাব্দী প্রাচীন বাংলোতে ব্রেকফাস্ট করিয়েই ঘুরে দেখানো হবে চা ফ্যাক্টরি ৷ তারপর তাঁদের গজলডোবার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে বলে এমন উদ্যোগের কথা জানান জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু ।

কীভাবে যাবেন ?

বিমানে গেলে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নামতে হবে ৷ সেখান থেকে সড়কপথে ক্রান্তি হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানে ৷ যদি ট্রেনে যান তাহলে মালবাজারে নেমে পড়ুন ৷ সেখান থেকে গাড়ি করে চালসা হয়ে পৌঁছে যাবেন বড়দিঘি চা বাগানের হেরিটেজ বাংলো বাড়িতে ৷ যাওয়ার আগে অবশ্যই রুম বুক করে যাবেন ৷ অনলাইনে সার্চ করলেই এই বাগান বাড়ির নম্বর পেয়ে যাবেন ৷ ফোন করে নিয়ে নিতে পারেন যাবতীয় তথ্য ৷

আরও পড়ুন:

  1. ডুয়ার্স মানেই চা বাগান আর লাভার জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া
  2. রক ক্লাইম্বিং, রাতে ক্যাম্প ফায়ার; ভ্রমণের নয়া ডেস্টিনেশন পাশাবং
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.