ধারওয়াড় (কর্নাটক): অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি? ফলের মাছি (Fruit flies) মহাকাশে উড়বে? যার বৈজ্ঞানিক নাম 'ড্রোসোফিলা মেলানোগাস্টার' ৷ এই মাছিগুলি আগামী বছর ইসরো-র বহু প্রতীক্ষিত 'গগনযান' মিশনের একটি পরীক্ষায় ব্যবহার করা হবে। কর্ণাটকের ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্স(ইউএএস)-এর বায়োটেকনোলজি বিভাগের সদস্যরা এই মাছিগুলোকে তৈরি করেছেন ৷
সূত্র অনুসারে, 15টি মাছির একটি কিট গগনযান মহাকাশযানে থাকবে ৷ এই মাছিগুলি মহাকাশচারীদের শরীরে কিডনিতে হওয়া স্টোনের আকার নির্ধারণ করতে সক্ষম হবে ৷ দেখা গিয়েছে কিডনিতে পাথর মহাকাশচারীদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা। এই মাছিগুলির মধ্যে কোনও পরবর্তন আসে কি না সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন বিজ্ঞানীরা ৷ ইউএএস বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রবি কুমার হোসামানি বলেন, "পরীক্ষাটি চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারে কার্যকর হবে, বিশেষ করে ভারতীয় মহাকাশচারীদের জন্য।"
গগনযানে থাকবে মাছি: গগনযানে একটি বিশেষ কিট থাকবে ৷ এই কিটে এই মাছিগুলিকে পাঠানো হবে ৷ সেগুলি বিশেষভাবে তৈরি করা হবে ৷ কিটগুলি অক্সিজেন পূর্ণ এবং ভিতরে সুজি ও গুড় মিশিয়ে এক ধরনের মন্ড তৈরি করা হবে মাছির খাবারের জন্য। হোসামানি আরও বলেন, "এই মাছিগুলিকে সোডিয়াম অক্সালেট (NaOx), ইথিল গ্লাইকল (EG) এবং হাইড্রক্সি এল প্রোলিন (HLP) খাওয়াব ৷ যাতে মাছি গুলি 3-4 দিনের মধ্যে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।"
এই গবেষণার জন্য, ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সে (UAS)-এর বিজ্ঞানীরা ISRO-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে গবেষণা করছেন ৷ 2025 সালে মহাকাশে মানুষকে পাঠানোর পরিকল্পনা আছে ৷ সেই মিশনের জন্য আগে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । বেশ কয়েকটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে 30 বারের বেশি যে সমস্ত নভোচারী মহাকাশে গিয়েছেন তাঁদের কিডনিতে পাথর দেখা গিয়েছে। তাই এই পরীক্ষা ৷
ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সের চ্যান্সেলর ডঃ পিএল পাটিলের কথায়, "আমরা যদি কিডনিতে পাথর গঠনের প্রক্রিয়া অধ্যয়ন ও পর্যবেক্ষণ করতে পারি, তবে আমরা আমাদের মহাকাশচারীদের বাঁচাতে এবং তাঁদের সুস্থ রাখতে সক্ষম হব।" গগনযান মিশনে চারজন মহাকাশচারীকে তিনদিনের জন্য মহাকাশে পাঠানো হবে।
চলতি বছরের 27 ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চার জন নভশ্চরের নাম ঘোষণা করেছিলেন, যাঁরা বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্র থেকে গগনযানে মহাকাশে পাড়ি দেবেন ৷ তাঁরা হলেন ক্যাপ্টেন প্রশান্ত বালাকৃষ্ণান নায়ার, অজিত কৃষ্ণান, অঙ্গদ প্রতাপ এবং উইং কমান্ডার শুভাংশু শুক্লা।