বারাসত, 19 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালিকাণ্ডে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে সেখানে আগেই সরকারি উদ্যোগে 'সমস্যা সমাধান'-ক্যাম্প করেছে প্রশাসন।মূলত, শিবু-উত্তমদের বিরুদ্ধে জমি হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তার সমাধান করতেই দুয়ারে সরকারের আদলে এই ধরনের জনসংযোগ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। এবার সন্দেশখালিতে বঞ্চিত গ্রামবাসীদের জমির পাট্টা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করল উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদ।
সোমবার সন্দেশখালি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে এমনই 54 জন গ্রামবাসী বারাসতে জেলা পরিষদ ভবনে এসেছিলেন, যাঁদের রাজ্য সরকার জমি দিলেও পাট্টা নথিভুক্ত হয়নি। সেখান থেকেই আরও 12 জন গ্রামবাসী এসেছিলেন নতুন করে জমির পাট্টা পাওয়ার আশায়। এরা আগেও 'দুয়ারে সরকার'-ক্যাম্পে জমির পাট্টার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, সমাধান সূত্র না-বেরনোয় ফের জেলা পরিষদে এদিন আসেন জমির পাট্টা পাওয়ার আশায়। সমস্তটাই নিয়ম মেনে জটচলদি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ৷
শাহজাহান-শিবু-উত্তম সন্দেশখালির এই 'ত্রিমূর্তি'-র বিরুদ্ধেই যাবতীয় ক্ষোভ গ্রামবাসীদের। জোর করে জমি দখল, বিঘার পর বিঘা জমিতে বেআইনিভাবে ভেড়ি ব্যবসা। জমির লিজের টাকা হাতিয়ে নেওয়া, রাতে পার্টি অফিসে ডেকে এনে মহিলাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ। এই অভিযোগকে ঘিরেই গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল হয়েছে সন্দেশখালি। শাহজাহান ও তাঁর দুই শাগরেদ শিবু-উত্তমের কড়া শাস্তির দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসছে সন্দেশখালির মানুষ। নিয়ম করে প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। রাজ্যপাল থেকে শুরু করে জাতীয় মহিলা কমিশন, এসসি-এসটি কমিশন। প্রত্যেকের কাছেই শাহজাহান বাহিনীর অত্যাচারের করুণ ইতিহাস তুলে ধরে নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়েছেন আদিবাসী মহিলারা।
তারই মধ্যে এবার শাহজাহান বাহিনীর আরও এক নতুন কীর্তি সামনে এল। সরকারি জমির পাট্টা গ্রামবাসীদের হাতে পেলেও সেই জমির পাট্টা নথিভুক্ত হয়নি শুধুমাত্র শাহজাহান বাহিনীর দাপটে। অভিযোগ, সরকারি জমির পাট্টাতেও নজর পড়েছিল শাহজাহান-শিবু-উত্তমদের। যার জেরে জমির পাট্টার নাম নথিভুক্ত থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছিল গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। শাহজাহান এলাকাছাড়া হতেই সেই পাট্টা নথিভুক্ত করার দাবি তুলছিল বঞ্চিত গ্রামবাসীরা। সেটাই সোমবার শুরু হল জেলা পরিষদের উদ্যোগে। অর্থাৎ ক্ষোভ প্রশমনে তৎপর হল প্রশাসন। এদিকে, জেলা পরিষদের তিতুমীর হলে এদিন ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরাও হাজির ছিলেন জমির পাট্টার সমস্যা মেটাতে। বঞ্চিত গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জমির প্রকৃত কাগজপত্র নেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখে শুরু হয় পাট্টা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া। অন্যদিকে, দীর্ঘ কয়েক বছর বাদে নতুন করে ফের জমির পাট্টা নথিভুক্তের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় এবার সেই জমির মালিকানা হাতে পাবেন বলে আশায় বুক বাঁধছেন বঞ্চিত গ্রামবাসীদের একাংশ।
আরও পড়ুন: