জলপাইগুড়ি, 21 জানুয়ারি: যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার চাঞ্চল্য ছড়াল কোতয়ালিতে । হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশের মারে যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের । অন্যদিকে, জেলা পুলিশ সুপারের দাবি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের । মৃতের নাম রাজা রায় (22)। আহত আরও এক যুবক বিট্টু সরকার জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধীন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবি করেছে মৃত যুবকের পরিবার ।
জানা গিয়েছে, গত 19 জানুয়ারি বিট্টু সরকার ও রাজা রায় নামে দুই যুবককে দশদরগা এলাকার মানুষরা চুরির অভিযোগে ধরে রাখে । কোতয়ালি থানার পুলিশকর্মীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে । পরিবারের দাবি, তারপর থেকেই পুলিশি হেফাজতে রাজা ও বিট্টুকে ব্যাপক মারধর করা হয় । এরপরেই রাজা ও বিট্টু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে । সোমবার রাতে তাদের দু'জনকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ ৷ মঙ্গলবার সকালে পরিবারকে পুলিশ জানায় রাজা মারা গিয়েছে । পরিবারের আরও দাবি, রাজার মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে । সম্পূর্ণ ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ ।
এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে বেড থেকে করা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে ৷ যাতে বিট্টুকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, পুলিশ রাজা রায়ের উপর অত্যাচার করেছে । মারধরের কারণেই রাজার মৃত্যু হয়েছে । যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা যায়নি ।
অপরদিকে জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে জানান, পুলিশের মারে কেউ মারা যায়নি । দুর্ঘটনাজনিত কারণেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে রাজা রায়ের মৃত্যু হয় । 19 জানুয়ারি চুরির অভিযোগে মারধরের সময় স্থানীয়দের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ ৷ এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় । সোমবার তারা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে । তখন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয় । সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মঙ্গলবার রাজা মারা যায় ।"
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার প্রমাণ স্বরূপ সংবাদমাধ্যমকে বিট্টুর বক্তব্য দেওয়া দুটি ভিডিয়ো দেন । সাংবাদিকদের সেই ভিডিয়োতে বিট্টু সরকারকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে তাদের একটি ডাম্পার ধাক্কা মারে সে কারণেই রাজার মৃত্যু হয়েছে ৷ পাশাপাশি আরও একটি ভিডিয়োতে বলতে শোনা যাচ্ছে যে গত 19 জানুয়ারি দশদরগা এলাকায় তারা চুরি করতে গিয়েছিল সেখানে সাধারণ মানুষ মারধর করে তাদের । বর্তমানে পুলিশের দেওয়া ভিডিয়ো ও পরিবারের দেওয়া ভিডিয়ো নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে জলপাইগুড়িতে ।
এদিকে, মৃত রাজা রায়ের স্ত্রী ডঙ্গা রায় বলেন,"আমার স্বামীকে পুলিশ গত 19 তারিখ থানায় নিয়ে যায় আমি দেখাও করে আসি । ও ভালো ছিল ।গতকাল থেকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি । আজ সকালে খবর পেলাম মারা গিয়েছে । পুলিশের অত্যাচারের আমার স্বামী মারা গিয়েছে বলে আমার মনে হয় । আমি এর সঠিক বিচার চাই ।"