মালদা, 17 অগস্ট: গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে ৷ আর সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করল দুই যুবক ৷ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদার মানিকচকে ৷ শুক্রবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি তুলেছে এলাকাবাসী ৷ এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষক ও তার দুই সঙ্গীকে আড়াল করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি ৷
ঘটনাটি ঘটেছে 13 অগস্ট ৷ মানিকচক থানার এলাকার একটি গ্রামে নির্যাতিতা বধূর বাড়ি ৷ তাঁর স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক ৷ বর্তমানে ভিনরাজ্যে কর্মরত ৷ দুই সন্তানকে নিয়ে একাই ঘরে থাকেন ওই বধূ ৷ মঙ্গলবার রাতে তিনি সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন ৷ অভিযোগ, সেদিন গভীর রাতে ওই মহিলার ঘরের দরজায় বেশ কয়েকবার ধাক্কা দেন অভিযুক্তরা ৷ প্রথমে নির্যাতিতা দরজা না-খুললে আবারও দরজায় ধাক্কায় দেয় ৷ দরজা খুলতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তিন যুবক ৷ অভিযোগ, তিন জন মিলে ওই নির্যাতিতা মহিলাকে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় ৷ সেখানে এক যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা ৷ ঘটনার সময় বাকি দুই যুবক মোবাইল ভিডিয়ো করে ৷
ঘটনা প্রসঙ্গেই নির্যাতিতা বলেন, "যারা ভিডিয়ো করছিল ওরা পাড়াতেই থাকে ৷ তবে নির্যাতন যে করেছে, তাকে চিনতে পারিনি ৷ পুরো বিষয়টি স্বামীকে ফোনে জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পরদিনই আমি থানায় যাই ৷ দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখার পর পুলিশ আমার অভিযোগ জমা নেয় ৷ আমার ভয়, ওই ভিডিয়ো ওরা সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে না-দেয় ৷"
মানিকচক থানার আইসি সুবীর কর্মকার জানান, ওই বধূ অভিযোগ দায়ের করার পরই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে ৷ অভিযুক্তদের খোঁজে চারদিকে চিরুনি তল্লাশি চলছে ৷ দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে ৷ থানার একটি সূত্র জানাচ্ছে, শারীরিক পরীক্ষায় ওই বধূকে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে ৷ আপাতত তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি ৷
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল ৷ তাঁর অভিযোগ, "যে সময় আরজি কর নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য, সেই সময় এই ভয়াবহ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে মানিকচক থানার পুলিশ ৷ ঘটনার 36 ঘণ্টা পর নির্যাতিতার অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়েছে ৷ এতে ধর্ষণের প্রমাণ মুছে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৷ আসলে ওই বধূ অত্যন্ত গরিব পরিবারের ৷ তার জন্যই হয়তো মানিকচক থানার পুলিশ প্রথমে তাঁর অভিযোগ জমা নিতে চায়নি ৷"