ঝাড়গ্রাম, 15 অক্টোবর: আশ্বিনের এই সময়েই লক্ষ্মী আর সরস্বতীর পুজো হয়ে আসছে বিনপুর 2 ব্লকের হাড়দা গ্রামে। বংশপরম্পরায় পূর্বপুরুষের শুরু হওয়া পুজো আজও ঐতিহ্যের সঙ্গে অটুট রয়েছে ৷ ধনদেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে জ্ঞানের দেবী সরস্বতীরও আরাধনা হবে। একইসঙ্গে লক্ষ্মী-সরস্বতীর আরাধনা হয়ে আসছে 162 বছর ধরে।
বিনপুর 2 নম্বর ব্লকের হাড়দা গ্রামে সাহা ও মণ্ডল পরিবারের উদ্যোগে এই পুজো হয়ে থাকে। কেবলমাত্র পুজো বললে ভুল বলা হবে, দুর্গাপুজোর থেকেও বেশি আনন্দই মেতে উঠেন এই গ্রামের মানুষরা। 5 দিন ধরে চলে পুজো আর পুজোকে কেন্দ্র করে 7 দিন ধরে আয়োজন করা হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ৷
একই চালায় লক্ষ্মীর বাম দিকে থাকেন সরস্বতী। লক্ষ্মী ও সরস্বতীর দু’পাশে চার জন সখী থাকেন। লক্ষ্মী ও সরস্বতীর সঙ্গে থাকেন দু’জন সেবাদাসিও। তাঁদের উপরে থাকেন ‘লুক-লুকানি’। এ ছাড়াও লক্ষ্মী ও সরস্বতীর মাথার উপরে থাকেন নারায়ণ। বিষ্ণুপুরাণ মতেই এভাবেই নারায়ণের দুই স্ত্রী লক্ষ্মী এবং সরস্বতীর পুজো করা হয় একই সঙ্গে।
পাশাপাশি আরও বিশেষত্ব রয়েছে এখানকার জিলাপি। 250 থেকে 300 কুইন্টালেরও বেশি জিলিপি বিক্রি হয় এই লক্ষ্মীপুজোয় । পুজো কমিটির সম্পাদক ভুবন মণ্ডল বলেন, "বিষ্ণুপুরাণ মতে নারায়ণের দুই স্ত্রী রয়েছে লক্ষ্মী ও সরস্বতী তাই আমরা একজনকে ছেড়ে কীভাবে আরেকজনের পুজো করতে পারি। সেজন্যই আমাদের পূর্বপুরুষের শুরু করা লক্ষ্মী-সরস্বতীকে একসঙ্গে পুজো করে চলেছি। এবছর আমাদের পুজো 162তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "পুজোকে কেন্দ্র করে আমরা আনন্দে মেতে উঠি। বিভিন্ন জায়গা থেকে আত্মীয়-স্বজনরা আসেন ৷ পাঁচ দিন ধরে বাড়িতে থাকেন জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া এবং পুজোর আনন্দ উপভোগ করি। পুজোকে কেন্দ্র করে সাত দিন ধরে চলে নামীদামি শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রা।"
16 অক্টোবর অর্থাৎ বুধবার থেকে লক্ষ্মীপুজো শুরু হবে চলবে 20 অক্টোবর পর্যন্ত। পুজোর ঘট উত্তোলনের সময় বিশেষ আতসবাজি আয়োজন করে পুজো কমিটি। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবছর 2 লক্ষ 90 হাজার টাকায় নিলাম পেয়েছে হাড়দা গ্রামেরই এক ব্যক্তি। চালগুড়ি দিয়ে তৈরি করা হয় এই জিলাপি। জিলাপির স্বাদ সবার থেকে আলাদা। তাদের এবারের পুজোর বাজেট রয়েছে প্রায় 14 লক্ষ টাকা। হাড়দা গ্রামের বসবাস 500টি সাহা-মণ্ডল পরিবারের থেকেই এই চাঁদা দেওয়া হয়।