জলপাইগুড়ি, 12 অগস্ট: জানেন কি বন্যপ্রাণী কুলে মাতৃতান্ত্রিক সমাজের কথা ? এমন একটা পরিবার, যে পরিবারে মহিলারাই সব সিদ্ধান্ত নেন। সন্তানদের বড় করতে পুরুষদের কোনও ভূমিকাই নেই। একটা সময় পুরুষদের পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরিবারের মা, ঠাকুমারাই পরিবারকে আগলে রাখে। হ্যাঁ, ভাবতে অবাক লাগলেও এমন নিয়মেই চলে হস্তি সমাজ।
গজরাজ পরিবারের বেশিরভাগই পুরুষরাই পরিবার ছেড়ে চলে যায় ৷ পুরুষরা কার্যত পরিবার ছেড়ে থাকতেই পছন্দ করে। বাচ্চাদেরও বড় করা থেকে শুরু করে লালনপালন সব কিছুই পরিবারের মহিলারাই করে থাকে। এখানে পুরুষদের কোনও অধিকার যেমন থাকে না, তেমনি পুরুষরা দায়িত্ব পালনও করে না।
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, "হস্তি কুলে বেশকিছু নিয়ম আছে। হস্তিকুল মাতৃতান্ত্রিক সমাজ। দলের সবচেয়ে বয়স্ক মহিলারাই সমস্তকিছু পরিচালনা করে। কোথায় যেতে হবে, রাস্তাঘাট সব তাদের জানা। তার কথাই সবাইকে মেনে চলতে হবে। যদি কেউ না-শোনে তাহলে তাকে দল থেকে বের করে দেওয়া হয়।"
জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক প্রবীণ কাশোয়ান জানান, হাতিদের দলে মহিলারাই শেষ কথা। যা কি না, অবাক করে দেওয়ার মতো। হাতিদের দলে মহিলাদের আধিক্যই বেশি। পুরুষ হাতিরা দলে প্রাধান্য পায় না। ফলে সন্তানদের বড় করা থেকে শুরু করে সবকিছু মহিলাদেরই করতে হয়। এক একটি হাতির দলে স্ত্রী হাতির সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। পরিবারের যা কিছু সিদ্ধান্ত সব কিছুই মা, কাকিমা, ঠাকুমারা নেয়। অত্যন্ত বুদ্ধিমান প্রাণী হাতি। কোনও সময়ে বাচ্চাদের আগে যেতে দেয় না। তারা বাচ্চাদের চার পায়ের মাঝে রেখে চলাচল করে ৷ কারণ, শাবক দলছুট না-হয়।
বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করা স্ন্যাপ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার কৌস্তুভ চৌধুরী বলেন, "হাতিকুল মাতৃতান্ত্রিক। মায়েদের কথাই শেষ কথা। একটা বয়স হওয়ার পর পুরুষদের দল থেকে বের করে দেওয়া হয়। মায়ের নির্দেশ ছাড়া কেউ চলে না। এটা আমাদের একটা শিক্ষনীয় বিষয়। আজকের বিশেষ দিনে অর্থাৎ হাতি দিবসে নানা অনুষ্ঠান করল বন দফতর।" কর্মীদের সম্মান জানানো থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের পোস্টারিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হল জলপাইগুড়ি আর্ট গ্যালারিতে। উপস্থিত ছিলেন, গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বীজ প্রতীম সেন, জলপাইগুড়ির বিভাগীয় বনাধিকারিক বিকাশ বিজয়-সহ অন্যান্যরা।