সোনারপুর, 27 জুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা চান না বাংলার মেয়েরা ৷ তার বদলে মাথার ঘাম পায়ে ফেলেই রোজগার করতে চান ৷ বৃহস্পতিবার পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে কাতর আবেদন বিক্ষোভকারীদের ৷ অর্থাৎ, লোকসভা নির্বাচনে যেখানে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেছিলেন, মমতার ভোট ব্যাঙ্কে মহিলা ভোট টেনেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ৷ সেই প্রকল্পই এখন মেনে নিতে নারাজ একাধিক মহিলা ৷
এদিন দুপুরে সোনারপুরে বুলডোজার নিয়ে হাজির হয় পুলিশ প্রশাসন ৷ ভাঙ্গা হয় একের পর এক দোকান। সোনারপুর বাজার এলাকায় এই দিন উচ্ছেদ অভিযানে নামে সোনারপুর রাজপুর পৌরসভা ও সোনারপুর থানার পুলিশ। উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময় কার্যত পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। বিক্ষোভের জেরে কিছু সময়ের জন্য উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ থাকলেও পুনরায় আবারও অ্যাকশনে নেমে পড়েন সোনারপুর থানার পুলিশ ও সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার পুর আধিকারিকরা। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন মহিলারা ৷
এক বিক্ষোভকারীর অভিযোগ, "দিদির উপর ভরসা করে ভোট দিয়েছি ৷ এখন তিনিই আমাদের পেটে লাথি মারছেন ৷ আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চাই না ৷ আমরা খেটে খেতে চাই ৷ আমাদের সংসার ভেসে গেল। সংসার চালাতে পারব না ৷ বাচ্চার পড়াশোনাও আর হবে না।" আর এক বিক্ষোভকারী বলেন, "আমরা এই ভেবে ভোট দিয়েছিলাম যে, দিদি আমাদের কথা শুনবে। কিন্তু এইভাবে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেবে ভাবিনি ৷ স্বামী কোনও রোজগার করেন না ৷ ব্যবসা করেই সাতজনের সংসার চলে ৷ আমরা কোনও রকম সরকারি সাহায্য চাই না ৷ চাই না লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ৷ আমাদের অল্প জায়গা দিক ৷ সেখানেই ব্যবসা চালাব ৷ কিন্তু অত্যন্ত জায়গাটা দিক ৷"
এদিন উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে সোনারপুরে ৷ চোখের সামনে সাজানো দোকান নিমেষে গুড়িয়ে যেতে দেখে চোখের জল বাঁধ মানে না অনেকেরই ৷ তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন এইভাবে ধূলিস্যাৎ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রত্যেক মহিলার কাতর আর্জি ৷ নিজেদের রুজি-রুটির শেষ সম্বলটুকু বাঁচিয়ে রাখার জন্য রীতিমত কাকুতি-মিনতি করতে দেখা যায় সোনারপুর বাজারের কয়েকশো ব্যবসায়ীদের।