মালদা, 12 এপ্রিল: মেলা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল ৷ দু’দিন আগে ঘটনাটি ঘটলেও এনিয়ে বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এই খবর চাউর হতেই ভোট বাজারে শোরগোল পড়েছে হবিবপুরে ৷ নির্যাতিতার বক্তব্য, তাঁকে দু’জন দুষ্কৃতী ধর্ষণ করেছে ৷ যদিও পুলিশের দাবি, দু’জন নয়, ওই মহিলাকে একজনই ধর্ষণ করেছে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ৷
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলাবর রাতে ৷ গ্রামের পাশেই পুজো উপলক্ষে বসেছিল তিনদিনের মেলা ৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একা মেলায় ঘুরতে যান বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলা ৷ অভিযোগ, মেলা চত্বর থেকেই তাঁকে তুলে নিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী ৷ ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় ৷ রাতভর সেই মাঠেই পড়েছিলেন তিনি ৷ বুধবার ভোরে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে হবিবপুর থানায় খবর দেয় ৷ পুলিশই মহিলাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ খানিকটা সুস্থ হয়ে গতকাল ওই মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷
মহিলার বক্তব্য, “রাত হয়ে যাওয়ায় লোকজন খুব একটা ছিল না মেলায় ৷ সেখান থেকেই দুই দুষ্কৃতী আমার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে যায় ৷ অন্ধকারে আমাকে ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে ৷ আমি অজ্ঞান হয়ে যাই ৷ জ্ঞান ফিরলে দেখি, পুলিশ আমাকে হাসপাতালে ভরতি করেছে ৷” যদিও হবিবপুর থানার এক আধিকারিকের দাবি, “গ্রামবাসীদের কাছে খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করি ৷ চিকিৎসার পর তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ ৷ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে একজনই ধর্ষণ করেছে ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷”
এই ঘটনায় গোটা হবিবপুর জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ সবার প্রশ্ন, ভরা মেলা থেকে যদি দুষ্কৃতীরা এভাবে মহিলাদের তুলে নিয়ে যায়, তবে নারীদের নিরাপত্তা কোথায় ? ঠিক সেই প্রশ্নটিই তুলেছেন হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জয়েল মুর্মু ৷ তাঁর অভিযোগ, “এ’রাজ্যে নারীদের যে কোনও নিরাপত্তা নেই, এই ঘটনা তা আরও একবার প্রমাণ করল ৷ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে ৷ এখানকার পুলিশ ও প্রশাসনও এখন শাসকদলের তল্পিবাহক হয়ে গিয়েছে ৷ এই ধর্ষিতা মহিলা যেন ন্যায্য বিচার পান, সেই দাবি রাখছি ৷”
হবিবপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কিষ্ট মুর্মুর বক্তব্য, “মেলা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মহিলাকে ধর্ষণের বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না ৷ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ৷ তবে পুলিশ সক্রিয়তার সঙ্গে মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে ৷ অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছে ৷ এ’রাজ্যে নারীদের যথেষ্ট নিরাপত্তা রয়েছে ৷ যা উত্তরপ্রদেশ, মণিপুরের মতো অনেক রাজ্যেই নেই ৷”
আরও পড়ুন