কলকাতা, 2 জানুয়ারি: নির্বাচন এলেই জনগণকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু, বন্যার হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে 'ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান' কবে বাস্তবায়িত হবে, প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে তা জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী 6 সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের সেচ দফতরের সচিবকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনকারীর আইনজীবীর দাবি, 1959 সাল থেকে ঘাটালের এই বন্যার সমস্যা চলছে । কেন্দ্র ও রাজ্যের পঞ্চাশ শতাংশ করে আর্থিক অনুদান দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার কথা। কিন্তু, কেন্দ্র অর্থ দিলেও রাজ্য বিগত 40 বছর ধরে কিছু করছে না বলে অভিযোগ করেন আবেদনকারীর আইনজীবী।
এর পরেই প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের রিপোর্ট তলব করেন। রাজ্য এবং ক্যাগ (সিএজি) আলাদা আলাদা রিপোর্ট এদিন আদালতে জমা করেছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, "কবে শেষ হবে কাজ ? কীভাবে বন্ধ করা যাবে বন্যা ? এ তো ক'টা লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে, ক'জনকে খাবার দেওয়া হয়েছে— সেই রিপোর্ট। কিন্তু, পাকাপাকি ভাবে কীভাবে বন্যা আটকানো যায়, সেই কাজ কতটা কী হয়েছে ? অবৈধ দখলদার সরানো এবং নদীবাঁধ তৈরির কাজ কি হল ?"
মামলাকারীর আইনজীবী শঙ্কর দলপতি জানান, এটা রাজ্য ও কেন্দ্রের সমান সমান টাকার প্রকল্প। 2019 সালের সিএজি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় 8 হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ! এরপর প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, "কিন্তু কাজ কবে হবে? এ তো কাজ হতে হতে পরের বছরের বন্যা শুরু হয়ে যাবে !"
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মূলত পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া ও হুগলির বন্যা পরিস্থিতি রুখতে ঘোষণা করা হয়েছিল 2019 সালে। নদীবাঁধে ভাঙন আটকাতে নতুন নদীবাঁধ তৈরি, পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু, বন্যা হলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, শুধু সেটাই জানানো হয়েছে আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে ৷ এই রিপোর্ট দেখে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।