কলকাতা, 3 মে: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন ৷ এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ পদাধিকার বলে রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ৷ তাঁর নিয়োগ হয় কেন্দ্রের তরফে। স্বভাবতই তাঁর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠা এবং তার তদন্ত-আর পাঁচটা তদন্তের থেকে অনেকটাই আলাদা ৷
ভারতীয় সংবিধান এক্ষেত্রে কী বলছে, এই পরিস্থিতিতে তদন্তকারীদের কী করণীয় ? যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, অর্থাৎ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালের তরফে কীভাবে আইনি মোকাবিলা করা হতে পারে ? এই সমস্ত দরকারি প্রশ্ন নিয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বললেন আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা ৷
আইনজীবীর বক্তব্য, "ভারতীয় সংবিধানের 361 নম্বর ধারা অনুযায়ী, রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনও রকম ফৌজদারি মামলার অভিযোগে তদন্ত করতে পারে না পুলিশ ৷ কোন আদালতও এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিতে পারে না ৷ আমার অন্তত মনে হয় না, এই বিষয়ে মাননীয় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও রকমের অভিযোগের তদন্ত করা যেতে পারে ৷"
তবে, তদন্ত যে একেবারই সম্ভব হবে না, তেমনটাও নয় ৷ এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে ৷ আর সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বা প্রশাসনের কোনও ক্ষমতাই নেই ৷ আইনজীবীর মতে, "প্রথমে লোকসভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পেশ করতে হবে ৷ সেখান থেকে অনুমোদন পেলে, সেই প্রস্তাব রাজ্যসভায় পেশ করতে হবে ৷ যদি, রাজ্যসভা ও লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সহমত হন একমাত্র তাহলেই এই বিষয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ৷"
তবে, এখানেও রয়েছে কিছু বিধিনিষেধ ৷ যে কোনও সংস্থা এই মামলার তদন্ত করতে পারবে না ৷ লোকসভা ও রাজ্যসভার অনুমোদনের পর একটি কমিটি তৈরি করতে হবে ৷ সেই কমিটির মাধ্যমে প্রথমে রাজ্যপালকে ইমপিচ করাতে হবে ৷ অর্থাৎ, রাজ্যপালকে তাঁর পদ থেকে সরাতে হবে ৷ একমাত্র তারপরই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব ৷ আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, " বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে আমার মনে হয় না, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও তদন্তের সম্ভাবনা রয়েছে ৷"
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় গতকাল রাতেই জানিয়েছেন, তাঁরা আইন এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছেন ৷ এই গোটা বিষয়ে তদন্ত-প্রক্রিয়া কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তা এখনই স্পষ্ট করে এখনই বলা যাচ্ছে না ৷ পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাতেই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, নির্বাচন চলাকালীন পুলিশ রাজভবনে প্রবেশ করতে পারবে না ৷
আরও পড়ুন: