কলকাতা, 12 এপ্রিল: পয়লা বৈশাখকে রাজ্য দিবস পালন করা নিয়ে কম রাজনৈতিক চাপানউতর হয়নি । শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রেজুলেশন পাস করে এই দিনটিকে রাজ্য দিবস হিসাবে পালনের কথা ঘোষণা করা হয় । খাতায়-কলমে এবারই প্রথম পয়লা বৈশাখ রাজ্য দিবস হিসাবে পালন হবে ৷ কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের কারণে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পয়লা বৈশাখ দিনটিকে রাজ্য দিবস হিসাবে উদযাপনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে । কমিশন রাজ্য দিবস পালনের অনুমতি দিলেও মুখ্যমন্ত্রীর অংশগ্রহণের বিষয়ে অনুমতি দেয়নি । ফলে রাজ্য দিবস যার মস্তিষ্কপ্রসূত, এবার সেই অনুষ্ঠানেই থাকতে পারবেন না তিনি ।
নবান্ন সূত্রে খবর, পয়লা বৈশাখ রবীন্দ্র সদনের সামনে ক্যাথিড্রাল রোডে দিনটিকে ঘটা করে উদযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংগীত, কবিতা, সাহিত্যে দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য থাকছে একাধিক অনুষ্ঠান । রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর গোটা বিষয়টির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে । জানা গিয়েছে, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা । শুধু মুখ্যমন্ত্রী না, কোনও মন্ত্রী বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ওইদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না । থাকবেন জয় গোস্বামী, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীজাতর মতো কবি ও শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে সমাজের সব স্তরের বিশিষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও সরকারি সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, শুধু রাজ্যস্তরেই নয়, জেলা স্তরে ও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বাংলা দিবস পালন করা হবে ৷ সে ক্ষেত্রেও কোনও জায়গাতেই কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। মূলত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, কবি, সঙ্গীত শিল্পী, বাউল শিল্পীদের দিয়েই এই রাজ্য দিবস উদযাপন করা হবে রাজ্যজুড়ে।
পয়লা বৈশাখকে রাজ্য দিবস হিসাবে পালনের পিছনেও একটা পটভূমি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মতো রাজভবনের তরফ থেকে 20 জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন শুরু করে রাজভবন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় এর কড়া বিরোধিতা করেন। এরপর মূলত তিনিই উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অবশেষে পয়লা বৈশাখ দিনটিকে বাংলা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু তাৎপর্য হল ভোটের কারণে ঘোষণার পর প্রথম বাংলা দিবস উদযাপনে গড়হাজির থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তবে পয়লা বৈশাখের দিন কলকাতায় থাকবেন তিনি। এই মুহূর্তে তিনি নির্বাচনী প্রচারে উত্তরবঙ্গে থাকলেও আগামিকাল শনিবার বিকালেই কলকাতায় ফিরছেন তিনি ৷ রাতে তিনি কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতেও যাবেন বলে খবর।
আরও পড়ুন