কলকাতা, 20 অগস্ট: আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিলই । সেই মতো দুপুরে ঘণ্টাখানেক মুষলধারে বৃষ্টি হল । আর তার জেরে কলকাতায় ফিরল চেনা জল-ছবি । জলের তলায় ডুবল বড় রাস্তা, গলি । কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে উঠল ফের প্রশ্ন । তবে জোয়ারের পর লকগেট খুললে জল দ্রুত নামবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকরা ।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা । দুপুর সাড়ে 12টা নাগাদ শুরু হয় বৃষ্টি । মুহূর্তে অঝোরে পড়তে থাকে । মুষলধারে বৃষ্টি টানা ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে হয় । বৃষ্টি যখন থামে, তখন গঙ্গায় জোয়ার আসায় সমস্ত জল বের হওয়ার লক গেটগুলো বন্ধ করতে হয় । ফলে কলকাতার বিভিন্ন অংশ ফের জলের তলায় চলে যায় ।
বিধান সরণি, অরবিন্দ সরণি, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, কলেজ স্ট্রিট, বউবাজার, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, বড়বাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের একাংশ, বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকা, বেলেঘাটা, যাদবপুরের কিছু অংশ, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট, তপসিয়া, কসবা, শিয়ালদহ, রাজাবাজার, পাতিপুকুর রেল ব্রিজ, মানিকতলা আন্ডারপাস জলমগ্ন হয়ে পড়ে ।
কলকাতা পুরনিগম সূত্র জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা 1টা 57 মিনিটে গঙ্গার জলস্তর 6.07 মিটার (19.92 ফুট) হওয়ার কথা । তাই গঙ্গার ধারের লকগেটগুলি বেলা 12টা থেকে বিকাল 4টে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে । ফলে এই সময়ের মধ্যে বৃষ্টি হলে জল নামার কোনও অবকাশ নেই । লক গেট খোলার পর বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগবে ধীরে ধীরে জমা জল নামতে ।
আর এ দিন বৃষ্টি ঠিক এই সময়টাতেই হয়েছে ৷ কলকাতা পুরনিগম থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, দুপুর 12টা থেকে দুপুর 2টো পর্যন্ত মানিকতলায় 78 মিলিমিটার, বীরপাড়ায় 27 মিলিমিটার, বেলগাছিয়ায় 71 মিলিমিটার, ধাপায় 4 মিলিমিটার, তপসিয়ায় 1 মিলিমিটার, উল্টোডাঙ্গায় 78 মিলি মিটার, পামার বাজারে 40 মিলি মিটার বৃষ্টি হয়েছে। তালতলায় 98 মিলিমিটার, দত্তবাগানে 83 মিলিমিটার, বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে 6 মিলিমিটার, চিংড়িঘাটায় 7 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ।
ফের জল জমা প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অল্প সময় বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হলে জল জমবে । তবে সেই জল আগের মতো দীর্ঘ সময় জমে থাকছে না । সম্প্রতি মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার পরেও জল জমেনি । আজ যে সময় বৃষ্টি নেমেছে, জল দাঁড়িয়েছে, ঠিক সেই সময়ই গঙ্গায় জোয়ার থাকাকালীন লক গেটগুলি বন্ধ করে দিতে হয়েছিল । তাই জলটা দাঁড়িয়ে আছে । জোয়ার চলে গেলে লগ গেট খোলা হলে কিছু সময়ের মধ্যেই ধীরে ধীরে জল নেমে যাবে ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এমনই মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার পরেও শহর কলকাতা জনমগ্ন না হওয়াতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন কলকাতার কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে নিকাশি বিভাগের মেয়র পরিষদ তারক সিং-সহ আধিকারিকরা ।