বোলপুর, 7 মে: প্রায় পাঁচ বছর ধরে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বন্ধ বিশ্বভারতীতে গ্রন্থ প্রকাশ । 2019 সাল থেকে বন্ধ রয়েছে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী ছাপাখানাটি ৷ 1917 সালে আমেরিকায় গিয়ে মুদ্রণ যন্ত্র উপহার পেয়েছিলেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ তা দিয়েই বিশ্বভারতীতে তৈরি হয়েছিল ছাপাখানা ৷ আগে প্রতি বছর রবীন্দ্রজয়ন্তী ও কবিপ্রয়াণে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হত সেখান থেকে । তবে সে সবই এখন অতীত ৷ আরও এক পঁচিশে বৈশাখের প্রাক্কালে যা নিয়ে আক্ষেপ ধরা পড়ল শান্তিনিকেতনবাসী থেকে আশ্রমিকদের মধ্যে । যদিও, এ প্রসঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষর তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷
'পঁচিশে বৈশাখ', এইটুকু বললেই নতুন করে আর বলে দিতে হয় না যে এটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন ৷ কারণ গুরুদেব বাঙালির হৃদয়ে সমাদৃত । প্রতি বছরের মতো এবারও পঁচিশে বৈশাখের সকালে গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিক, রবীন্দ্রভবনে কবিকন্ঠ, উপাসনা গৃহে ব্রহ্ম উপাসনা, বৈদিক মন্ত্রপাঠ, মাধবীবিতানে জন্মোৎসব অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় গৌরপ্রাঙ্গণে নৃত্যনাট্য পরিবেশনা । তবে আগে রবীন্দ্রজয়ন্তী হোক বা কবি প্রয়াণ স্মরণ, সবেতেই নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রন্থ প্রকাশিত হত বিশ্বভারতীয় ঐতিহ্যবাহী ছাপাখানা থেকে । 2019 সাল থেকে সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে ।
উল্লেখ্য, 2019 সাল থেকে বন্ধ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী ছাপাখানাটি ৷ 1917 সালে 8 জানুয়ারি আমেরিকায় একটি অনুষ্ঠানে 'জাতীয়তাবাদ' শীর্ষক বক্তব্য রেখেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৷ সেখানে গুরুদেব একটি মুদ্রণ যন্ত্র উপহার হিসেবে পান ৷ এই যন্ত্রটি শান্তিনিকেতন আশ্রমের পড়ুয়াদের জন্য ছিল ৷ মুদ্রণ যন্ত্রটি বিশ্বভারতীতে এনে স্থাপন করা হয় ৷ 1918 সালে এখান থেকে প্রথম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গানের দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বরলিপি প্রকাশিত হয় ৷ এরপর থেকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ প্রকাশিত হতে থাকে বিশ্বভারতীর এই ছাপাখানা থেকে । ঐতিহ্যবাহী এই ছাপাখানা বর্তমানে বন্ধ । যা নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে শান্তিনিকেতনবাসী ও আশ্রমিকদের মধ্যে ।
ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, "কী আর বলব, এক এক করে সব কিছুই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৷ ঐতিহ্য বলে কিছু নেই ৷ আক্ষেপ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই ।"
আরও পড়ুন: