দত্তপুকুর (উত্তর 24 পরগনা), 5 ফেব্রুয়ারি: ঘটনার পর 48 ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে । এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি দত্তপুকুরে উদ্ধার হওয়া দেহের কাটামুন্ডুর । পুলিশের কাছে সূত্র বলতে মৃতদেহের বাঁ হাতে লেখা 'আর' অক্ষরটি । আর তা দিয়েই পুলিশ যুবকের পরিচয় পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ।
এদিকে, দত্তপুকুর-কাণ্ডে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ! সেখানে বলা হয়েছে, এক কোপেই যুবকের মুন্ডু ধর থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে । যা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, পেশাদার কেউ এই নৃশংস খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে । তাই খুনের পিছনে 'সুপারি' কিলারের যোগ থাকার সম্ভবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ।
সোমবার সাতসকালে উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরের মালিয়াপুর গ্রামে চাষের জমির আল থেকে বছর চল্লিশের এক যুবকের মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার হয় । ওই যুবকের হাত-পা বাঁধা ছিল । সেই বাঁধা হাত-পা ছিল আংশিক পোড়া অবস্থায় । শুধু তাই নয়, ওই যুবকের যৌনাঙ্গও ক্ষতবিক্ষত করা ছিল । স্থানীয় এক মহিলা এই বীভৎস দৃশ্য দেখে থানায় খবর দেন ।
পরে, পুলিশ এসে ওই দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায় । মৃতদেহের পাশে রক্তমাখা মদের গ্লাস ও চিপসের প্যাকেট পড়েছিল । দেহ পাওয়া গেলেও ওই যুবকের মুন্ডুর খোঁজ পাওয়া যায়নি । তাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই দত্তপুকুরের বাজিতপুর খালে ডুবুরি নামিয়ে চলে যুবকের কাটা মুন্ডুর খোঁজ । দিনভর প্রশিক্ষিত ডুবুরি দিয়ে ওই খালে তল্লাশি চললেও মেলেনি যুবকের কাটা মুন্ডুর খোঁজ । শেষমেশ তল্লাশি বন্ধ করে দেওয়া হয় । 48 ঘণ্টা পরেও কাটা মুণ্ডুর খোঁজ না মেলায় যুবকের পরিচয় পেতে গিয়ে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছে বারাসত পুলিশ জেলার কর্তাদের ।
তাই, মৃত যুবকের পরিচয় জানতে পুলিশের হাতে সূত্র বলতে তাঁর বাঁ হাতে আঁকা দু'টি ট্যাটু । তাঁর একটিতে লাভ চিহ্ন আঁকা রয়েছে । অন্যটিতে রয়েছে ইংরেজি হরফে 'আর' অক্ষর লেখা । 'আর' মানে কে, আপাতত তার উত্তর পেতে চাইছে পুলিশ । দেহ উদ্ধারের পর বারাসত জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পার্শ্ববর্তী সমস্ত থানাতে মৃতদেহের ছবি তুলে পাঠানো হয়েছিল । জানার চেষ্টা হয়েছিল কোনও যুবক মিসিং রয়েছে কি না !
এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও তথ্য হাতে আসেনি পুলিশের । ফলে যুবকের দেহ শনাক্তকরণ করা যাচ্ছে না । তাই পুলিশের অনুমান, মৃত যুবক স্থানীয় নাও হতে পারেন । অন্য কোনও জায়গা থেকে তাঁকে ডেকে এনে খুন করা হতে পারে । বারাসত পুলিশ জেলার এসপি প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া জানান, তদন্ত চলছে ৷ নিহত যুবকের পরিচয় জানার সবরকমের চেষ্টা চলছে ৷
অন্যদিকে, যুবকের পরিচয় পেতে হন্যে হয়ে পুলিশ এখন বারাসত-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সমস্ত আবাসিক হোটেলে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে । গত তিন-চার দিনের মধ্যে যে সমস্ত আবাসিকরা সেখানে এসেছিলেন, তাঁদের বিষয়েও তথ্য নেওয়া হচ্ছে । বারাসতের অদূরে বামনগাছির কাছে একটি টাউনশিপ গড়ে উঠেছে । সেখানে বহু বহিরাগত মানুষ কাজে আসেন । পুলিশ সেখানে গিয়েও খোঁজখবর নিয়েছে । কিন্তু, তারপরও জোরালো কোনও সূত্র হাতে আসেনি তদন্তকারীদের ।