ETV Bharat / state

নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে গ্রামে হাঁটুজল, সমস্যায় মালদার একাধিক এলাকা - Waterlogged Malda

Malda Waterlogging Situation: দু'দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন মালদার বেশ কিছু গ্রাম, যার জেরে স্বাভাবিকভাবে সমস্যায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দারা ৷ এলাকা পরিদর্শনে পঞ্চায়েত প্রধান ৷

Malda News
মালদার বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন (Etv Bharat)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 3, 2024, 9:34 PM IST

মালদা, 3 অগস্ট: কাগজে কলমে বর্ষাকাল হলেও এতদিন বরুণদেবের কৃপা পায়নি মালদা ৷ বৃষ্টিপাত হয়নি বললেই চলে ৷ শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে উৎপন্ন ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে ৷ শুক্রবার দিনভর দফায় দফায় ভিজেছে জেলার প্রতিটি প্রান্ত ৷ তাতেই বিপদে পড়েছেন আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা ৷

মালদার একাধিক গ্রাম জলমগ্ন (ইটিভি ভারত)

সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুজল এই গ্রামগুলিতে ৷ বিষাক্ত সাপ আর পোকামাকড়ও সেই জলে দেখা যাচ্ছে ৷ অবিলম্বে জমা জল বের করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা ৷ শনিবার এলাকাগুলি পরিদর্শন করে পাম্প লাগিয়ে জল বের করার চেষ্টা করতে দেখা গেল স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বাসনা মণ্ডলকে ৷

বৃষ্টির অভাবে চরম সমস্যায় ছিলেন জেলার আমনচাষিরা ৷ আমনের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল ৷ বিশেষ করে এই সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছিল বরিন্দ এলাকার চারটি ব্লকে ৷ কারণ, বরিন্দ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত গাজোল, বামনগোলা, হবিবপুর ও পুরাতন মালদা ব্লকে জলের জোগান নেই বললেই চলে ৷ ভূ-গর্ভেও সেভাবে জল পাওয়া যায় না ৷

এই অবস্থায় কৃষকদের নির্ভর করতে হয় নদী আর বৃষ্টির উপর ৷ বৃষ্টি না হওয়ায় নদীনালাতেও তেমন জল ছিল না ৷ শেষে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের বৃষ্টি কৃষকদের চিন্তা অনেকটাই দূর করেছে ৷ চাষের জমিতে খানিকটা জলও জমেছে ৷ জলের অভাবে পাট পচাতে পারছিলেন না অনেকেই ৷ জেলা কৃষি দফতরও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিল ৷ এই বৃষ্টি পাটচাষিদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছে ৷

এদিকে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে মুখ ব্যাজার হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সিনগর, সোনামণিতলা, বিবেকানন্দ পল্লি, স্ট্যান্ডপাড়া, ভরপাড়া প্রভৃতি গ্রামে ৷ বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা সন্তোষ সিংহ বলেন, "এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা খুব খারাপ ৷ সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে যায় ৷ বাড়ির মেয়েরা বাইরে বেরতে পারে না ৷ স্কুল যাওয়ার সময় বাচ্চাদের কোলে নিয়ে জল পার করতে হয় ৷ সবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ৷ গোটা এলাকাটাই এখন জলের তলায় ৷"

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন জল ভেঙেই এলাকা পরিদর্শন করেন আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাসনা মণ্ডল ৷ সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিশাখা হালদার ৷ এলাকার এক তরুণ সুবীর কর্মকার বলেন, "এখানে একটা ড্রেন তৈরি করা খুবই প্রয়োজন ৷ না হলে বারবার এভাবে জল জমবে ৷ জমা জলে বিষাক্ত সাপ-সহ পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ ভয়ে রাতে ঘরের বাইরে বেরনো যাচ্ছে না ৷ একদিনের বৃষ্টিতেই এখানে হাঁটুজল ৷ পাঁচদিন এমন বৃষ্টি হলে কী হবে ? এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে আজ প্রধান আর পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে আবেদন জানালাম ৷"

পঞ্চায়েত প্রধান বাসনা মণ্ডলের বক্তব্য, "গোটা এলাকা পরিদর্শন করে দেখলাম, কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে ৷ নিকাশির জন্য আমরা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি ৷ কিছু জায়গায় ড্রেন হয়েছে ৷ কিছু জায়গায় নতুন করে তৈরিও করা হবে ৷ আসলে ব্রিজ এলাকার জল বক্সিনগর ও সংলগ্ন এলাকা দিয়েই বয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায় ৷ এবার সেই নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে ৷ এই এলাকার সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বড়সড় পরিকল্পনা প্রয়োজন ৷ সেটা শুধু পঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এই নিয়ে আমরা পঞ্চায়েতের সব সদস্য এবং আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি ৷ তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে ব্যবস্থা নিলে সেটা ভালো হবে বলেই মনে করি ৷ আপাতত তিনটি পাম্প মেশিন ব্যবহার করে জমা জল বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছি ৷"

মালদা, 3 অগস্ট: কাগজে কলমে বর্ষাকাল হলেও এতদিন বরুণদেবের কৃপা পায়নি মালদা ৷ বৃষ্টিপাত হয়নি বললেই চলে ৷ শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে উৎপন্ন ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে ৷ শুক্রবার দিনভর দফায় দফায় ভিজেছে জেলার প্রতিটি প্রান্ত ৷ তাতেই বিপদে পড়েছেন আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা ৷

মালদার একাধিক গ্রাম জলমগ্ন (ইটিভি ভারত)

সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুজল এই গ্রামগুলিতে ৷ বিষাক্ত সাপ আর পোকামাকড়ও সেই জলে দেখা যাচ্ছে ৷ অবিলম্বে জমা জল বের করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা ৷ শনিবার এলাকাগুলি পরিদর্শন করে পাম্প লাগিয়ে জল বের করার চেষ্টা করতে দেখা গেল স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বাসনা মণ্ডলকে ৷

বৃষ্টির অভাবে চরম সমস্যায় ছিলেন জেলার আমনচাষিরা ৷ আমনের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল ৷ বিশেষ করে এই সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছিল বরিন্দ এলাকার চারটি ব্লকে ৷ কারণ, বরিন্দ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত গাজোল, বামনগোলা, হবিবপুর ও পুরাতন মালদা ব্লকে জলের জোগান নেই বললেই চলে ৷ ভূ-গর্ভেও সেভাবে জল পাওয়া যায় না ৷

এই অবস্থায় কৃষকদের নির্ভর করতে হয় নদী আর বৃষ্টির উপর ৷ বৃষ্টি না হওয়ায় নদীনালাতেও তেমন জল ছিল না ৷ শেষে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া নিম্নচাপের বৃষ্টি কৃষকদের চিন্তা অনেকটাই দূর করেছে ৷ চাষের জমিতে খানিকটা জলও জমেছে ৷ জলের অভাবে পাট পচাতে পারছিলেন না অনেকেই ৷ জেলা কৃষি দফতরও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিল ৷ এই বৃষ্টি পাটচাষিদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছে ৷

এদিকে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে মুখ ব্যাজার হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সিনগর, সোনামণিতলা, বিবেকানন্দ পল্লি, স্ট্যান্ডপাড়া, ভরপাড়া প্রভৃতি গ্রামে ৷ বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা সন্তোষ সিংহ বলেন, "এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা খুব খারাপ ৷ সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে যায় ৷ বাড়ির মেয়েরা বাইরে বেরতে পারে না ৷ স্কুল যাওয়ার সময় বাচ্চাদের কোলে নিয়ে জল পার করতে হয় ৷ সবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ৷ গোটা এলাকাটাই এখন জলের তলায় ৷"

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন জল ভেঙেই এলাকা পরিদর্শন করেন আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাসনা মণ্ডল ৷ সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বিশাখা হালদার ৷ এলাকার এক তরুণ সুবীর কর্মকার বলেন, "এখানে একটা ড্রেন তৈরি করা খুবই প্রয়োজন ৷ না হলে বারবার এভাবে জল জমবে ৷ জমা জলে বিষাক্ত সাপ-সহ পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ ভয়ে রাতে ঘরের বাইরে বেরনো যাচ্ছে না ৷ একদিনের বৃষ্টিতেই এখানে হাঁটুজল ৷ পাঁচদিন এমন বৃষ্টি হলে কী হবে ? এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে আজ প্রধান আর পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে আবেদন জানালাম ৷"

পঞ্চায়েত প্রধান বাসনা মণ্ডলের বক্তব্য, "গোটা এলাকা পরিদর্শন করে দেখলাম, কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে ৷ নিকাশির জন্য আমরা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি ৷ কিছু জায়গায় ড্রেন হয়েছে ৷ কিছু জায়গায় নতুন করে তৈরিও করা হবে ৷ আসলে ব্রিজ এলাকার জল বক্সিনগর ও সংলগ্ন এলাকা দিয়েই বয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায় ৷ এবার সেই নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে ৷ এই এলাকার সঠিক নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বড়সড় পরিকল্পনা প্রয়োজন ৷ সেটা শুধু পঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এই নিয়ে আমরা পঞ্চায়েতের সব সদস্য এবং আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি ৷ তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে ব্যবস্থা নিলে সেটা ভালো হবে বলেই মনে করি ৷ আপাতত তিনটি পাম্প মেশিন ব্যবহার করে জমা জল বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.