কুলতলি, 8 অক্টোবর: অগ্নিগর্ভ কুলতলি ৷ মহিষমারিতে ধর্ষিতা নাবালিকার দেহ গ্রামে পৌঁছাতেই বিক্ষোভে নামলেন গ্রামবাসীরা ৷ দেহ নিয়ে সকালে মিছিল করলেন তাঁরা ৷ এরপর পুলিশ এলাকায় ঢুকতেই পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ৷ এমনকি বারুইপুর পুলিশ জেলার এসডিপিও অতিস বিশ্বাস গ্রামে ঢুকতে গেলে, তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা ৷ বিক্ষোভের মুখে পড়ে গাড়ি ঘুরিয়ে এলাকা ছাড়েন এসডিপিও ৷
সোমবার ময়নাতদন্তের পর আজ সকালে নিহত নির্যাতিতা নাবালিকার দেহ মহিষমারিতে আসে ৷ দেহ গ্রামে আসার পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা ৷ দেহ নিয়ে মিছিল ও বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা ৷ আজ সকালে কৃপাখালি এলাকা থেকে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ি পর্যন্ত নির্যাতিতা নাবালিকার দেহ নিয়ে মিছিল করা হয় ৷ দেহ নিয়ে মিছিলের পর বেশ কিছুক্ষণ রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা ৷ সেখান থেকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় শেষকৃত্যের জন্য ৷ নিরাপত্তার জন্য এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল ৷
এ দিন শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল ৷ শেষকৃত্য সম্পন্ন হতেই এলাকায় উত্তেজনা বাড়ে ৷ কিন্তু, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ ও গো-ব্যাক স্লোগান তোলেন গ্রামবাসীরা ৷ পুলিশকে রীতিমতো তাড়া করেন তাঁরা ৷ অভিযোগ উঠেছে, একদল আন্দোলনকারী পুলিশের গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয় ৷ এরপর গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় ৷ পুলিশ কেন ঘটনার দিন শুরুতেই নাবালিকার খোঁজ করল না ? সেই প্রশ্নে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা ৷
খবর পেয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার এসডিপিও অতিস বিশ্বাস এলাকায় পৌঁছান ৷ তবে, তিনিও মাঝ রাস্তায় আন্দোলনের মুখে পড়েন ৷ দক্ষিণ বারাসতের দিক থেকে এসডিপিও ঢুকতে গেলে, তাঁর গাড়িতেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ৷ এসডিপিও-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের জুতো দেখানো হয় ৷ তাঁর গাড়ির উপরে অনেকে উঠে পড়ে বলে অভিযোগ ৷ বিক্ষোভের মুখে পড়ে এলাকা ছাড়েন এসডিপিও ৷ জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় আরও পুলিশ নামানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে ৷
অন্যদিকে, আজ বিকেলে এবিভিপি-র তরফে জয়নগর থানা ঘেরাও করা হয় ৷ আরএসএস-এর এই ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা মহিষমারিতে নাবালিকার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জয়নগর থানার সামনে জমায়েত করে ৷ তাঁদের ঠেকাতে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় ৷ থানা থেকে কিছুটা দূরে ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ ৷ ব্যারিকেড পেরিয়ে এগোতে না পারলেও, সেখানেই পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান এবিভিপি-র সদস্যরা ৷
এ নিয়ে এবিভিপি-র সদস্য পূর্বা হালদার বলেন, "পুলিশ যে কতটা ব্যর্থ, আজ সেটা বোঝাতেই আমরা এখানে এসেছিলাম ৷ আমাদের থানা ঘেরাও করার পরিকল্পনা ছিল ৷ তবে, সেভাবে কিছু করিনি ৷ কিন্তু, আমাদের গ্রামাঞ্চলে যেভাবে মেয়েরা অত্যাচারিত হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি থাকবে ৷"