আসানসোল, 22 অগস্ট: শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দিলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাত্র আন্দোলনের জেরে তিনি ভয়ে বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন। শেষবার 16 অগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে গিয়েও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভে পড়েছিলেন। অপমানিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছিলেন। বুধবার ই-মেইল মারফত নিজের ইস্তফা পাঠিয়ে দেন রাজ্যপালের কাছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। যদিও উপাচার্য নিজে কিছু জানাতে চাননি ৷
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা মামলা খাতে খরচ হচ্ছে ৷ অথচ সেই টাকায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়ন হতে পারত ৷ এমনই অভিযোগ তুলে কত টাকা মামলা খাতে খরচ হয়েছে, তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি নিয়ে গত এক মাসের বেশী সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধরনা অবস্থান চলছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ৷ এর মাঝে উপাচার্যকে না-পেয়ে তাঁর দফতরে তালাও ঝুলিয়ে দেন টিএমসিপি সমর্থকরা ৷
কিন্তু বেশ কয়েকদিন আন্দোলন চলার পর রাজ্যের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশে দু'টি কাজ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁকে সেদিনও বিরাট বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল ৷ এমনকি তাঁর দফতরের লাইট, ফ্যান যাতে না-চলে, তাই ইলেকট্রিক কানেকশন কেটে দেওয়া হয়েছিল ৷ শারিরীকভাবেও তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ তুলেছিলেন উপাচার্য।
গত 30 জুলাই থেকে দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের আবাসন থেকে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' করতে থাকেন ৷ ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় তিনি স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় যেতে ভয় পাচ্ছেন ৷ কারণ তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ৷ এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যায়লে যান। কিন্তু তখনও তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। কার্যত বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন উপাচার্য ৷ তারপর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি তিনি।
আর বুধবারই কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে ইস্তফা দেন দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ই-মেইল মারফত ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দেন রাজ্যপালের কাছে । এই ঘটনায় টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় জানান, আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে।