গঙ্গাসাগর, 11 নভেম্বর: প্রশাসনিক বৈঠকে অবশেষে কাটল জট ৷ সপ্তাহের প্রথম দিনে দক্ষিণ 24 পরগনায় স্বাভাবিক ভেসেল পরিষেবা ।
দু'দফা দাবিকে সামনে রেখে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম জলপথের সমস্ত শাখার শ্রমিকেরা । বেতন পরিকাঠামো চালু ও ঠিকাদারি প্রথা বাতিল এবং সকল কর্মীকে সংস্থার নিজস্ব চুক্তিতে নিয়োগ করতে হবে । এমনই দাবিকে সামনে রেখে সোমবার থেকে সমস্ত জলপথের ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কর্মীরা । সপ্তাহের প্রথম দিন ভেসেল পরিষেবা বন্ধ থাকলে সমস্যার মধ্যে পড়তে হত নিত্যযাত্রীদের । তবে এমনটা হয়নি ৷ তার আগেই উঠে গেল কর্মবিরতি ৷
কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, রবিবার সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপকুমার পাত্র, পরিবহণ দফতরের একাধিক মন্ত্রী ও আধিকারিকেরা এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন ।
দফায় দফায় বৈঠকের পর অবশেষে কাটে জট । প্রশাসনিক আশ্বাসে ও যাত্রী সাধারণের কথা মাথায় রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হন আন্দোলনকারীরা । ফলে জেলার সমস্ত জলপথে স্বাভাবিক চলে ভেসেল পরিষেবা । কচুবেড়িয়া থেকে কাকদ্বীপের লট নম্বর 8 পর্যন্ত এ দিন সকাল থেকেই মুড়িগঙ্গা নদীর উপর শুরু হয় ভেসেল পরিষেবা ।
এ বিষয়ে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য তথা গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপকুমার পাত্র বলেন, "গতকাল সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা হয় এবং তাঁদের সমস্ত দাবি আমরা অতি মনোযোগ সহকারে শুনি । দাবিগুলোর বিষয় নিয়ে আগামিদিনে ভাবনা চিন্তা হবে, এমনটাই আশ্বাস দেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ।"
তাঁর কথায়, "যাত্রী সাধারণের কথা মাথায় রেখে আমরা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করি যে, তাঁরা আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা যেন প্রত্যাহার করা হয় । আমাদের অনুরোধে আন্দোলনকারীরা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন এবং সোমবার স্বাভাবিক ভেসেল পরিষেবা ।"
ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক থাকায় খুশি এলাকার মানুষ থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা । নিত্যযাত্রী রহিম ঢালি বলেন, "সাগর বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ ৷ এই দ্বীপের একমাত্র যাতায়াতের পরিষেবা হচ্ছে ভেসেল পরিষেবা । সেই ভেসেল পরিষেবা যদি বন্ধ থাকে তাহলে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে এলাকার মানুষজনকে । ভেসেলের পরিবর্তে ট্রলারে করে নদী পারাপার করা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ । যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায় । তাই ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ায় খুশির আমরা ৷"
ভেসেল কর্মী অসীমকুমার দাস বলেন, "রবিবার সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা আমাদের আন্দোলন মঞ্চে আসেন এবং আমাদের সঙ্গে কথা বলেন । এমনকি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গেও আমাদের কথা বলান ৷ প্রশাসনিক আশ্বাসে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ভেসেল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করি এবং আজ থেকে আমরা ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক করেছি ।"