ব্যারাকপুর, 10 অগস্ট: নিহত চিকিৎসকের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে শনিবার দিনভর রাজনৈতিক নেতাদের ভিড় লেগে থাকল সোদপুরের নাটাগড়ের বাড়িতে! বাম-ডান সবপক্ষই রাজনীতির ভেদাভেদ ভুলে একবাক্যে মৃত চিকিৎসকের বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৷ সকলেই দাবি করেছেন নৃশংস এই হত্যা-কাণ্ডে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। সংবাাদমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন অপরাধীর ফাঁসি হওয়া উচিত ৷
পাশাপাশি তিনি জানান, কেন্দ্রীয় এজেন্সি অর্থাৎ সিবিআই এই নৃশংস হত্যা-কাণ্ডের তদন্তভার নিলেও সরকারের কোনও অসুবিধা নেই ৷ তা সত্ত্বেও আরজি করের ঘটনায় ক্ষোভ কমছে না কিছুতেই ৷ দিনভর এনিয়ে উত্তাল হয়েছে হাসপাতাল চত্বর। তারই মধ্যে শনিবার বেলা গড়াতেই নিহত ট্রেনি চিকিৎসকের সোদপুরের বাড়িতে ভিড় বাড়তে থাকে রাজনৈতিক দলের নেতাদের।
এদিন প্রথমে মৃতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মা'র সঙ্গে দেখা করেন শাসকদলের দুই নেতা। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, দু'জনেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন বেশ কিছুক্ষণ ৷ পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা বলেন, "ওই পরিবার আমাদের পরিচিত। মেয়ের সঙ্গে যা ঘটেছে,তা ন্যক্কারজনক। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।" দু’জনেই মৃতের বাবা-মায়ের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সৌগত এবং শোভনদেব বেরিয়ে যাওয়ার পর এদিন নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে যান সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ৷ সঙ্গে ছিলেন দীপ্সিতা ধরও। তাঁরাও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন একান্তে। পাশে থাকার বার্তা দেন।
এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, "নির্ভয়া-কাণ্ডের চেয়েও কম ভয়াবহ নয় এই ঘটনা ৷ এর বীভৎসতা মুখে প্রকাশ করা যাবে না ৷" তবে যেভাবে ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল তা নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন এই সিপিএম নেতা ৷ এদিকে, তৃণমূল ও বাম নেতৃত্ব এলাকা ছাড়তেই নিহতের বাড়িতে গিয়ে হাজির হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, দলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল সহ গেরুয়া শিবিরের নেতারা। বাম, তৃণমূল নেতৃত্বের মতো এদিন বিজেপি নেতারাও মৃত চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন ৷
এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "আমরা কানাঘুষো শুনছি এই ঘটনার পিছনে আরজি কর হাসপাতালের কোনও ইন্টার্নেরও নাকি হাত রয়েছে ৷ যদি সেটা হয়ে থাকে তাহলে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন ৷ তবে, পুলিশের ভূমিকা প্রথম থেকেই সন্দেহজনক ৷ এক্ষেত্রে আমরা পার্টির তরফে জনস্বার্থ মামলা করতে চলেছি হাইকোর্টে, যাতে কোর্টের মাধ্যমে সিবিআই এই ঘটনায় তদন্ত করতে পারে ৷"
অন্যদিকে, আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের একার পক্ষে এই নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন নিহত চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যরা ৷ এর পিছনে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ তাঁদের ৷