কলকাতা, 11 নভেম্বর: মাদকপাচারের অভিযোগে আটক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু বিএসএফ হেফাজতে ৷ শনিবার রাতে বনগাঁয় ভারত-বাংলাদেশ আঙরাইল সীমান্তে বিএসএফ 2 জন পাচারকারীকে আটক করে ৷ তাঁদের মধ্যে একজন ক্যাম্পে অসুস্থ বোধ করেন ৷ তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন ৷
মৃতের নাম বাবাই বারুই ৷ তিনি বনগাঁ পল্লিশ্রী এলাকার বাসিন্দা ৷ এর আগেও দু’বার মাদকপাচারের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বাবাই ৷ অন্যদিকে, বিএসএফ হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার ৷ মাদকপাচারের ঘটনায় আটক আরেকজনকে মাদক-সহ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ৷
বিএসএফ সূত্রে খবর, শনিবার রাত 11টা নাগাদ বিএসএফের 5 নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা চারজন ব্যক্তিকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করতে দেখেন ৷ সেই সময় বিএসএফের তরফে তাঁদের থামতে বলা হয় ৷ তবে, বাহিনীর নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে জিরো লাইনের দিকে এগিয়ে যায় চারজন ৷
সেই সময় জওয়ানরা ওই চারজনকে ধাওয়া করেন ৷ অভিযোগ, তখনই ধারালো অস্ত্র বের করে বাহিনীর উপর চড়াও হন তাঁরা ৷ হামলা থেকে বাঁচতে শূন্যে গুলি চালায় বিএসএফ ৷ তখন দু’জন ভারতীয় সীমান্তেই গা-ঢাকা দেয় ৷ তবে, বাবাই বারুই এবং আরেকজন বাঁচার জন্য ইছামতী নদীতে ঝাঁপ দেন ৷
এরপর বিএসএফ দুই পাড় থেকে ঘিরে ধরে নদীতে তল্লাশি শুরু করে ৷ বেশ কিছুক্ষণের তল্লাশিতে 500 বোতল ফেনসিডিল ও 2টি অস্ত্র উদ্ধার করে বাহিনী ৷ এর কিছুক্ষণের মধ্যে ইছামতীর জল থেকে দুই পাচারকারীকে ধরে ফেলেন বিএসএফ জওয়ানরা ৷ সেই সময়ও দুই পাচারকারী বিএসএফ জওয়ানদের সঙ্গে মারামারি করেন বলে জানা গিয়েছে ৷
এরপর তাঁদের বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয় ৷ দীর্ঘক্ষণ নদীর ঠান্ডা জলে থাকায়, বাবাই এবং তাঁর সঙ্গীর জন্য শীত বস্ত্র ও আগুনের ব্যবস্থা করে বাহিনী ৷ কিন্তু, বাবাই বারুই হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ তাঁকে দ্রুত বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন ৷ দেহটি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ বিএসএফ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের পর ওই পাচারকারীর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে ৷
ঘটনার বিষয়ে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, "বাবাই বারুই এর আগেও চোরাচালান ও অবৈধ কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন ৷ তবুও, আমাদের জওয়ানরা তাঁর জীবনরক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছিল ৷ যখন তিনি অসুস্থ বোধ করেন, তখন তাঁকে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয় ৷"
সূত্রের দাবি, 2021 সালে এনডিপিএস আইনের অধীনে ফেনসিডিল চোরাচালানের জন্য দুই বছর জেল হয়েছিল বাবাই বারুইয়ের ৷ তবে, জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও মাদক পাচার শুরু করেন তিনি ৷ চলতি বছর 25 মে একই অভিযোগে বিএসএফ তাঁকে আটক করে ৷ পরে জামিনে ছাড়া পান ৷