কালনা, 23 জানুয়ারি: মাটিতে শতরঞ্চি পাতা হয়েছে । বসে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা । উলটো দিকে মঞ্চের মেঝেতে বসে আসেন কোর্ট প্যান্ট পরা এক ভদ্রলোক । তিনি মেঝেতে বসেই মাইক হাতে বলছেন, "আজ কত তারিখ বলো তো ? সমস্বরে উত্তর এল, 23 জানুয়ারি স্যার ।
তোমরা কি কেউ জানো আজকের দিন কেন বিখ্যাত ? উলটো দিক থেকে উত্তর এলো, আজকে বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন । কী করে জানলে তোমরা ? কেউ বলে বাবার কাছে শুনেছে । কেউ আবার জানায় মা শিখিয়েছে । কেউ কেউ বলেছে নেতাজির জন্মদিনের কথা তারা জেনেছে বই পড়ে ।
এই কথোপকথনের মধ্যেই স্যার যেন কত আপন হয়ে উঠেছেন খুদে পড়ুয়াদের কাছে । এরই মধ্যে বেলা 12টা 15 মিনিট বাজতেই বাজতে থাকে সাইরেন, বাজানো হয় শাঁখ । পালন করা হয় নেতাজির 128তম জন্মদিবস ।

যিনি মাইক হাতে মঞ্চের মেঝেতে বসে ছিলেন তিনি কালনার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডা । নেতাজির জন্মদিনে তিনি কালনার রামেশ্বরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেতাজির জন্মদিবস উপলক্ষে হাজির ছিলেন । ছোটগল্পের মাধ্যমে সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন ও তাঁর আদর্শ সম্পর্কে অনেক কিছু জানান খুদে পড়ুয়াদের । সেসব শুনে বেজায় খুশি ছাত্রছাত্রীরা ।
বৃহস্পতিবার নেতাজি সুভাষচন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে কালনার রামেশ্বরপুর ও কয়ালডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কালনা মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সেখানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নাচ, গান, আবৃত্তি, একাঙ্ক নাটক পরিবেশন করে । অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মেঝেতেই ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বসে গল্প শুরু করেন কালনার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডা । সুভাষচন্দ্র বসুর গল্প ছাড়াও ছোট ছোট গল্প শুনিয়েও তিনি ছাত্রছাত্রীদের আনন্দ দেন ।
কয়ালডাঙা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা মহুয়া রায়চৌধুরী বলেন, "নেতাজির জন্মদিন উপলক্ষে আমাদের স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল । আমি বাচ্চাদের নিয়ে নাটক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটা ঘরে ছিলাম । হঠাৎ করে বাইরে এসে ওঁর বক্তব্য শুনে মোহিত হয়ে যাই । ওঁর মতো এত বড় মাপের মানুষ এভাবে মাটিতে বসে বাচ্চাদের যে মূল্যবান বক্তব্য শোনালেন সেই কথা শুনে আমরাও সমৃদ্ধ হলাম ।"
কালনার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডার কথায়, "শিশুরা হচ্ছে আমাদের আয়না। তাদের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরই দেখি । ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটার জন্য তাদের এখন থেকেই বিভিন্নভাবে তৈরি করতে হবে । আজকের মতো বিভিন্ন দিনে তাদের যদি যথাযথ শিক্ষা দিতে পারি তাহলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পৃথিবী অনেক বদলে যাবে ।"