রায়গঞ্জ, 13 ডিসেম্বর: চোপড়ায় বাংলাদেশী নাবালিকার পর এবার কালিয়াগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে দুই বৃদ্ধাকে আটক আটক করল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) ৷ লাগাতার প্রাণনাশের হুমকি ও অত্যাচারের ভয়ে তাঁরা কাঁটা তার পেরিয়েছেন বলে দাবি । তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিএসএফের তরফে । ধৃত দুই বৃদ্ধাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন ।
আদালত সূত্রে খবর, ধৃত দুই বৃদ্ধার নাম আধো বর্মন (80) ও কাঞ্জু বালা (74) । আধো বর্মনের বাড়ি বাংলাদেশের পীরগঞ্জ এলাকায় ও কাঞ্জু বালার বাড়ি বাংলাদেশের দিনাজপুর এলাকায় । বুধবার তাঁদের রাধিকাপুর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটক করে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ । বৃহস্পতিবার তাঁদের রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয় ৷
পরিবার সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় । এলাকায় বেশ কিছু সংখ্যালঘু মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ধৃত দুই বৃদ্ধার পরিবারের ৷ প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ । সেই ভয়ে ভারতে তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে সীমান্তের এপারে আসার সিদ্ধান্ত নেয় তাঁরা ৷
ধৃত বৃদ্ধা আধো বর্মনের ছেলে সুরেন্দ্র বর্মন 1999 সালে ভারতে চলে আসেন । হেমতাবাদ এলাকার ভরতপুরের মিঠাবাড়ি এলাকায় তাঁর বাড়ি । বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতি দেখে এবং ক্রমাগত হুমকির ঘটনায় নিজের মা-কে এদেশে আসার পরামর্শ দেন তিনি । সেই কারণে সত্তরোর্ধ মা রাধিকাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান বলে জানা গিয়েছে ।
সুরেন্দ্র বর্মন বলেন, "আমার মা আর কয়দিনই বা বাঁচবে ? যে কয়েকদিন জীবিত আছেন, সেই কয়েকদিন আমার কাছেই থাকুন । বাংলাদেশে ক্রমাগত সংখ্যালঘুদের উপরে যেভাবে অত্যাচার চলছে তাতে আমরা খুবই আতঙ্কে ছিলাম ৷ মায়ের কী হবে ? এই ভেবে চিন্তায় রাতে ঘুম আসছিল না ৷ সবকিছু আগের মতো কবে হবে, জানি না । তাই মা সব ছেড়ে আমার কাছে চলে আসার সীদ্ধান্ত নেন ।" বৃদ্ধা মাকে তাঁর কাছে থাকতে দেওয়ার কাতর আর্জি জানান সুরেন্দ্র বর্মন ।
ধৃত বৃদ্ধা কাঞ্জু বালা বলেন, "ওখানে খুব অত্যাচার চলছে । বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে । থাকার জায়গা নেই । তাই এদেশে চলে এসেছি । এখানে মেয়ের বাড়ি ।" ঘটনায় সরকারি আইনজীবী নিলাদ্রী সরকার বলেন, "অনুপ্রবেশের দায়ে দুই বৃদ্ধাকে আদালতে পাঠায় কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ । তাঁদের 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন মহামান্য বিচারক ।"