দত্তপুকুর, 12 জানুয়ারি: নাম বদলে বহাল তবিয়তে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বসবাস করছিলেন বাংলাদেশের নুরুল হক ! ভারতে তাঁর পরিচয় নারায়ণ অধিকারী ৷ অভিযোগ, ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে বহুবছর উত্তর 24 পরগনার বারাসতের কাজিপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি ৷ আর যাঁর বাড়িতে বসবাস করিছিলেন, সেই রফিকুল ইসলামও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে অভিযোগ ৷
অভিযোগ, রফিকুলও ভুয়ো পরিচপত্র ও নথির সাহায্য জমিবাড়ি করেছিলেন বারাসতে ৷ তবে, শেষরক্ষা হল না ৷ দত্তপুকুর থানার পুলিশ ওপার বাংলার রফিকুল ইসলাম এবং নুরুল হক গ্রেফতার করেছে ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, নুরুল ভারতে নারায়ণ অধিকারীর ভুয়ো পরিচয়ে ভোটার, আধার ও প্যান কার্ড তৈরি করেছিলেন ৷ অভিযোগ, রফিকুল ইসলামও ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে কাজিপাড়ায় জমি কিনে বাড়িও করেছিলেন ৷ সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন ৷ আর সেই বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন নুরুল ওরফে নারায়ণ ৷
রফিকুলের বাড়ি বাংলাদেশের মাদারিহাটে ৷ কাজিপাড়ায় নিজেকে মাছ ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিতেন ৷ আর তাঁর বাড়িতে ভাড়া থাকা নুরুলও বাংলাদেশের নাগরিক ৷ কিন্তু, কীভাবে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বাংলাদেশের রফিকুল ভারতে জমিবাড়ি করলেন ! তাহলে কি, এখানেও সর্ষের মধ্যে ভূত ! কারা তাঁদের এই বেআইনি কাজে সাহায্য করলেন ? এই চক্রের পিছনে মাথা কে বা কারা, তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা ৷
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বারাসত থেকে এক ল'ক্লার্ক সমীর দাসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ৷ অভিযোগ, তিনি বাড়িতেই ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানোর চক্র খুলে বসেছিলেন ৷ পরবর্তী সময়ে তাঁর আরেক সাগরেদ তথা এক গৃহশিক্ষককে জাল পাসপোর্ট চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ৷
ধৃত নুরুল হক এবং রফিকুল ইসলাম সেই ল'ক্লার্কের সাহায্যে ভুয়ো নথি বানিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ দত্তপুকুর থানার আধিকারিকরা ধৃত দু’জন অনুপ্রবেশকারীকে জেরা করে ভুয়ো পরিচয়পত্র ও জাল পাসপোর্ট চক্রে জড়িতদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন ৷
এলাকায় নাম-পরিচয় গোপনে আর কোনও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বসবাস করছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা ৷ ইতিমধ্যে, খোঁজখবরও নেওয়া শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন ৷ কিন্তু, তারপরেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, দুই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এতদিন ভারতে বসবাস করার পরেও, কেন তা টের পেলে না-পুলিশ প্রশাসন ?