দুর্গাপুর, 12 মে: বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বণ । উৎসব মানেই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষজনের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ৷ আপাতদৃষ্টিতে রাজ্যে কোনও উৎসব না থাকলেও, সাত দফার নির্বাচন এক প্রকার উৎসবে পরিণত হয়েছে ৷ রাজ্যে ভোটের উন্মাদনা যেকোনও রাজ্যের ভোট উৎসবকে হার মানাবে। রাজনৈতিক দলগুলিও প্রচারে ঢাক-ঢোল ব্যবহার করছে ৷ ফলে অতিরিক্ত উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন ঢাকিরা ৷
দিল্লির কুর্সি জয়ের যুদ্ধে জিততে রাজনৈতিক দলগুলি ইতিমধ্যে জোর কদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে ৷ রাজ্যে 3 দফার নির্বাচন পর্ব শেষ হয়েছে ৷ তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস জোট ভোটারদের নজর কাড়তে আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখেনি ৷ আর ভোট প্রচারে এবার ডাক পড়েছে ঢাকি, ব্যাঞ্জো, আদিবাসী লোক সঙ্গীতের দল থেকে সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে জড়িত একাধিক গোষ্ঠীর ৷ অন্য বার বছরের এই সময় কৃষিকাজে ব্যস্ত থাকেন তাঁরা ৷ তার উপর 100 দিনের কাজ থাকে ৷ তবে এবছর ছবি অনেকটাই ভিন্ন ৷
রাজ্য-কেন্দ্রের টালবাহানার কারণে 100 দিনের কাজের সুযোগ থেকে অনেকেই বঞ্চিত হয়ছেন ৷ তাই কিছু বেশি উপার্জনের আশায় কার্যত হতাশ হয়েই শহরমুখী গ্রামীণ ঢাকি, ব্যাঞ্জোবাদক ও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা ৷ এই ভোট পরবে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকারা সেইসব মানুষেরা বিকল্প অর্থনীতির সন্ধান পান । অন্য বছরগুলিতে এই সময় গ্রামাঞ্চলে গাজন উৎসব থাকে ৷ তাতে ঢাকিরা সেরকমভাবে ঢাক বাজানোর সুযোগ পান না ৷ কিন্তু এবার পেয়েছেন ৷ চারিদিকে বাজছে ঢাক ৷
ঢাকিরাও বাম-ডানের ফারাক না খুঁজে যেদিক থেকে ডাক পাচ্ছেন ছুটে যাচ্ছেন ৷ কাস্তে-হাতুড়ি-তারা কিংবা হাত চিহ্নের প্রার্থীর সঙ্গে হোক কিংবা জোড়া ফুল বা পদ্ম ফুল শিবিরের সঙ্গে কাঁধে ঢাক নিয়ে লম্বা পথ পাড়ি দিচ্ছেন দূর-দূরান্তে ৷ বেশি অর্থ উপার্জনের চেষ্টা ৷ এই এক ছবি বেশ কিছু আদিবাসী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মহিলা ও পুরুষদেরও ৷ তারাও নিয়মিত ডাক পাচ্ছেন ভোট প্রচারে ৷ রাজ্যের জেলায় জেলায় এই একই ছবি ধরা পড়ছে ৷
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর প্রতিটি প্রচারে আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত নর-নারীদের ধামসা মাদল নিয়ে তৈরি রাখার কথা স্থানীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন ৷ সব মিলিয়ে তাই ভোট পরবে কার কী এসে যাবে, কে জয়ী বা কে পরাজিত হবে, তা নিয়ে ওদের মাথাব্যথা নেই ৷ গ্রামীণ পিছিয়ে পড়া বাদ্যকর থেকে জঙ্গলের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আদিবাসীরা গণতান্ত্রিক দেশের সবচেয়ে বড় উৎসবের খুঁজে পেয়েছেন বিকল্প অর্থ রোজগারের পথ ৷
আরও পড়ুন: