কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর: ট্রামে চেপে পুজো পরিক্রমার দিন শেষ। পরিবহণ দফতর পুজো পরিক্রমার ব্যবস্থা করলেও তাতে ট্রাম থাকবে না বলে জানিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। গতবছরই প্রথমবার এসি ট্রামে কলকাতার পুজো দেখিয়েছিল পরিবহণ দফতর।সুসজ্জিত ট্রামে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রিয় পুজোগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছিল। তবে এবার আর সেই ব্যবস্থা থাকছে না। অন্যদিকে যানজটের সমস্যা মোকাবিলা করতে শহরের শুধুমাত্র একটি রুটেই চলবে ট্রাম। ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত ট্রাম চলবে বলে মন্ত্রী জানান ।
বনেদি বাড়ির ঠাকুর
ভলভো এসি বাসে কলকাতার বনেদি বাড়ির ঠাকুর দেখানো হবে। পুজোর চারদিন যাত্রা শুরু হবে ধর্মতলার ট্রাম টার্মিনাস থেকে সকাল 8টায়। পৌঁছতে হবে সকাল 7.30টার সময়। বাবুঘাট থেকে শুরু করে বাগবাজার হালদার বাড়ি, বেলুড় মঠ শোভাবাজার রাজবাড়ি, লাটুবাবুর বাড়ি, রানি রাসমণির বাড়ি, বেহালা রায় বাড়ি বেহালা সোনার দুর্গা বাড়ি, সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের বাড়ির পুজো দেখানো হবে। ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী ও নবমীতে এই বিশেষ বাস ছাড়বে। জন প্রতি 2000 টাকা দিতে হবে । 5ও 10 বছরের শিশুদের জন্য দিতে হবে 1500 টাকা । 5 বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্য কোনও ভাড়া লাগবে না । সকলের জলখাবার থেকে শুরু করে দুপুর মধ্যাহ্নভোজের পাশাপাশি বিকেলের খাবারও দেওয়া হবে । এছাড়া চা এবং পানীয় জলও দেওয়া হবে । প্রত্যেক দর্শনার্থীদের সঙ্গে সচিত্র পরিচয় পত্র রাখা আবশ্যিক ।
জল পথে উত্তরের বিশিষ্ট পুজো
পরিবহণ নিগমের উদ্যোগে জল পথেও দর্শনার্থীরা উত্তর কলকাতার বিশিষ্ট পুজোগুলি দেখতে পাবেন। মিলিনিয়াম পার্ক থেকে লঞ্চ ছাড়বে সকাল 11টার সময়। তারপর হাওড়া জেটি ঘুরে পৌঁছবে আহরিটোলা ঘাটে। সেখানে থাকবে একটি এসি বাস। এই বাসটি বিশিষ্ট পুজোগুলি দেখাবে দর্শনার্থীদের। যাত্রা পথে থাকবে আহাড়িটলার সংলগ্ন পুজো গুলি । তাছাড়া শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো,কুমোরটুলি পার্ক ও কুমোরটুলি সর্বজনীন, জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো দেখারও ব্যবস্থা থাকবে। তারপর নিয়ে যাওয়া হবে বলরাম মন্দির ও সারদা মায়ের বাড়ি। শেষে বাগবাজার সর্বজনীন পুজো মণ্ডব দেখিয়ে যাত্রীদের বাগবাজার স্টিমার ঘাটে এনে আবার লঞ্চে তুলে দেওয়া হবে। হাওড়া জেটি ঘুরে মিলিয়ে নিয়ম পার্কে গিয়ে শেষ হবে যাত্রা। মোট সময় লাগবে 5 ঘন্টা । দর্শনার্থীদের জন্য লঞ্চে ও যাত্রাপথে স্নাক্স চা দেওয়া হবে । ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী ও নবমীতে এই বিশেষ পরিষেবা দেওয়া হবে । ভাড়া জনপ্রতি 800 টাকা ।
বিলাসবহুল বাসে পুজো পরিক্রমা
ধর্মতলা থেকে বারাসাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার পুজো এসি ও ভলভো বাসে ঘুরে দেখার ব্যবস্থা থাকছে। একডালিয়া, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, মুদিয়াল, শিবমন্দির, মহাম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, বাগবাজার পল্লী এই পূজগুলি দেখানো হবে। বারাসাত থেকে জনপ্রতি ভাড়া 2100 টাকা । ধর্মতলা থেকে জনপ্রতি ভাড়া 2000 টাক। বাসে স্ন্যাকস,চা, কফি ও লাঞ্চ পাওয়া যাবে। পরিষেবা মিলবে ষষ্ঠী, সপ্তমী,অষ্টমী, নবমী । সকাল 9টায় ছাড়বে বাস । যাত্রা শেষে একই জায়গায় ফিরে আসবে ।
শহরতলি থেকে কলকাতা বাসে পরিক্রমা
হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সিটিসি টার্মিনাস, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো, বারাসাত কলোনি মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা, ডানলপ মোড়ের ট্রামিনাস থেকেও ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে মিলবে পরিষেবা। বাস নির্ধারিত রুটে শহরের বিখ্যাত বারোয়ারির পুজো গুলি দেখাবে । তারপর যথাযথ স্থানে ফিরে আসবে। হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন সিটিসি টার্মিনাস, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে ভাড়া জনপ্রতি 450 টাকা। বারাসাত কলোনি মোড়, ব্যারাকপুর থেকে ভাড়া জনপ্রতি 500 টাকা। হাবড়া ডিপো থেকে ভাড়া জনপ্রতি 600 টাকা। দর্শনীয় পুজোগুলি হল-একডালিয়া, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আসার সংঘ, মুদিয়ালি, শিবমন্দির, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, বাগবাজার পল্লী।
কামারপুকুর ও জয়রামবাটিতে পুজো দর্শন
অষ্টমীর দিন সকালে ধর্মতলা থেকে একটি বাস ছাড়বে ভোর 5টায় । বারাসাত থেকে ভোর 4 টে বেজে 15 মিনিটে। বাসটিতে এসপ্ল্যানেড ট্রাম অফিস, বাগবাজার বাটা ও ডানলপ মোড় থেকে ওঠা যাবে। জয়রামবাটিতে পুজো দর্শনের পর ফিরতি পথে কামারপুকুর দর্শন করানো হবে রাজ্য পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে । নন এসি বাসটি জনপ্রতি ভাড়া এসপ্ল্যানেড থেকে 700 টাকা । বারাসাত থেকে 800 টাকা ভাড়া। বাসে হালকা স্ন্যাকস চা,কফি দেওয়া হবে ।
শহর থেকে দূরে গ্রাম বাংলার পুজো দেখা
কলকাতা থেকে 75 কিলোমিটার দূরে বসিরহাট সংলগ্ন দুটি গ্রামে বনেদি বাড়ির পুজো দেখানো হবে। এসি বাস ছাড়বে সকাল 8 টায় এসপ্ল্যানেড টার্মিনাস থেকে । রাজারহাটে চিনার পার্কের কাছে এসে পৌঁছাবে 8 টা বেজে 30 মিনিটে। দর্শনীয় স্থান:- গায়েন বাড়ি, সাহু বাড়ি, বল্লভ বাড়ি, রাধাকান্ত মন্দির। এরপর এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে আড়বালিয়া গ্রামে। সেখানে বসু পরিবার আর ভট্টাচার্য পরিবারের ঠাকুর দেখানো হবে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি বনেদি বাড়ির ঠাকুর দেখানো হবে। জনপ্রতি ভাড়া পড়বে 2000 টাকা। সকালের জলখাবার এবং দুপুরের ভোগ দেওয়া হবে । এই পরিষেবা ও মিলবে সপ্তমীর, অষ্টমী এবং নবমীতে ।