দার্জিলিং, 30 সেপ্টেম্বর: চা-বাগানের শ্রমিকদের 20 শতাংশ বোনাসের দাবিতে বনধ চলছে পাহাড়ে । সোমবার সকাল থেকে 12 ঘণ্টার এই বনধের ডাক দেয় চা বাগানের 8টি ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ । 2017 সালে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে টানা প্রায় 100 দিন বনধ হয়েছিল ৷ তার ঠিক 8 বছর পর ফের পাহাড়ে বনধ । এ দিনের বনধের জেরে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা ৷ পাহাড়ে আটকে রয়েছেন তাঁরা ৷
সাঁতরাগাছি থেকে পাহাড়ে আসা পর্যটক গৌরব সেনের কথায়,"আমরা 11 জনের দল এসেছি ৷ আমরা কার্শিয়াংয়ে ক্যাম্পে যাচ্ছিলাম ৷ রাস্তায় গাড়ি আটকে দিয়েছে ৷ জানতাম না পাহাড়ে বনধ চলছে ৷ সকাল 7টা থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি ৷ কখন গাড়ি ছাড়বে জানি না ৷"
মূলত, পুজোর বোনাসের দাবিতে চারটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় ৷ কিন্তু রবিবার রাতে চতুর্থ তথা শেষ বৈঠক ভেস্তে যায় । ওই বৈঠক ভেস্তে যেতেই এ দিন সকাল থেকে বনধের ডাক দেয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ । এরপর এ দিন সকাল থেকে বনধের ব্যাপক প্রভাব দেখা গেল পাহাড়ে । সকাল থেকেই পাহাড়ের রাস্তা শুনসান । রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে ৷ জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে । সোনাদাতেও বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামেন আন্দোলনকারীরা । কার্শিয়াংয়ে বেশ কয়েকজন বনধ সমর্থকদের আটক করে পুলিশ ।
অন্যদিকে, রোহিণী টোল গেটে পর্যটকদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান বনধ সমর্থকরা । এ দিকে বনধের জেরে রোহিণী টোলগেটের দুই প্রান্তে পর্যটকদের গাড়ির লাইন পড়ে যায় ৷ পর্যটকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা ৷ কেবল জরুরি ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িতদের গাড়ি চলাচল করছে ৷ জায়গায় জায়গায় চলছে ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীদের পিকেটিং । পিকেটারদের কথায়, চা-বাগান শ্রমিকদের সমস্যার কথা পর্যটকদেরও জানা প্রয়োজন । দেশের জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় বসে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা । ট্রেড ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়, আগামিকাল থেকে প্রতিটি কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হবে । চলবে কর্মবিরতি ।
এ দিন দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, "আমাদের দাবি একটাই ছিল, চা বাগানের শ্রমিকদের 20 শতাংশ বোনাস । কিন্তু মালিকপক্ষ তা দিতে অস্বীকার করেছে । এজন্য এ দিন সকাল থেকে গোটা পাহাড় বনধ । কোনও গাড়ি চলছে না । কাল থেকে চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করা হবে ।"
চা বাগানের শ্রমিকদের দাবিকে সামনে রেখে এককাট্টা পাহাড় ৷ অনিত থাপার বিজিপিএম, ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ, অজয় এডওয়ার্ডয়ের হামরো পার্টি ও বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-সহ সকলে এ দিনের বনধকে সমর্থন করেছে ৷