কালিম্পং, 13 জুন: সিকিমে টানা বৃষ্টির জেরে ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা ৷ নদীর জল ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজার ও মাল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । বুধবার মাঝরাত থেকেই ওই এলাকায় নদীর জল ঢুকতে শুরু করে । আতঙ্কে প্রাণ বাঁচাতে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন । কারণ তাঁদের আজও তাড়া করে বেড়াচ্ছে গত অক্টোবর মাসে সিকিমের হড়পা বানের স্মৃতি ৷
অক্টোবরে সিকিমে বাঁধ ভেঙে নেমে আসে ভয়াবহ হড়পা বান । জলের তোড়ে ভেসে যায় প্রায় আশিটি বাড়ি । বহু মানুষের প্রাণ যায় ৷ সেই ঘটনার পর কয়েক মাস কাটতে না-কাটতেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের একই আতঙ্ক গ্রাস করেছে তিস্তা বাজার ও মাল্লি এলাকাবাসীকে । সকালে অনেক বাড়িতেই জল ঢুকে যাওয়ায় সেই হড়পা বানের ভয়াবহ স্মৃতি ফের তাজা হয়ে ওঠে স্থানীয়দের মধ্যে ৷ সেখানকার মানুষজন হাতের কাছে থাকা প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে পাহাড়ের ঢালে উঠে যান । কারণ তাঁরা জানেন যে, বানভাসি হতে হলে এভাবেই প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে ৷
বর্ষার সময় না-হলেও সিকিমে নাগাড়ে বৃষ্টির ফলে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । তাহলে বর্ষাকাল এলে কী দুর্দশা হবে সেটা ভেবেই দুশ্চিন্তা ক্রমে বাড়ছে এলাকাবাসীর । স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াসিম আনসারি বলেন, "শুধুমাত্র সিকিমে বৃষ্টির ফলেই তিস্তা নদীর জল এই হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । এখন বর্ষাকাল নয়, তবুও আমাদের এই পরিস্থিতি । জানি না বর্ষা এলে কী হবে । মাঝরাত থেকে এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে । বহু মানুষ ঘর ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে অন্যত্র সরে গিয়েছেন ।" আরেক বাসিন্দা ভগবান লাল প্রসাদ বলেন, "খুবই দুশ্চিন্তায় আছি আমরা । জল যেভাবে বাড়ছে, জানি না কী করব ! সরকার সাহায্য না-করলে আমাদের ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে ।"
উল্লেখ্য, টানা প্রবল বৃষ্টির জেরে উত্তর সিকিমের লাচুং এলাকায় ধস নেমেছে ৷ বৃহস্পতিবার লাচুংয়ের পার্কসাঙ্গ থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এই ঘটনার পরই জরুরিকালীন বৈঠক ডাকেন উত্তর সিকিমের জেলাশাসক । তবে মৃতদের নাম জানা যায়নি । সূত্রের খবর, টানা বৃষ্টির কারণে জলস্ফীতি হয়েছে তিস্তা নদীতে। সেই কারণেই বন্যা পরিস্থিতি লাচুংয়ে ৷ নদীর পাশে থাকা বেশকিছু বাড়ি ভেসে গিয়েছে জলের স্রোতে ৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট । সিংথাম ও রঙপোতে তিস্তা নদীর জলস্তর লাল সতর্কতা পেরিয়ে গিয়েছে ৷