কলকাতা, 28 অগস্ট: নবান্ন অভিযানের ডিউটি করতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণে সম্ভবত চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারালেন কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি চলাকালীন একটি ইটের টুকরো ধেয়ে আসে তাঁর বাঁ চোখের দিকে ৷ গলগল করে রক্ত পড়তে থাকে চোখ দিয়ে ৷ তারই মধ্যে চলে বেধড়ক মারধর ৷ পুলিশকর্মীরা এসে তাঁকে উদ্ধার না-করলে প্রাণটাই চলে যেত ৷ ইটিভি ভারতকে একথা জানালেন সেই মুহূর্তে দেবাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে ডিউটিতে থাকা কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইডি) আরীশ বিলাল ৷
ঠিক কী ঘটেছিল ঘটনাস্থলে ? নিজের চোখে দেখা সেই অভিজ্ঞতার কথা ইটিভি ভারতের কাছে তুলে ধরেছেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ইডি) ৷ তিনি বলেন, "আমি দেবাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গেই ছিলাম । আচমকাই দুপুরবেলা খবর এল যে, বাবুঘাটে ঝামেলা হচ্ছে । আমি এবং সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী বাবুঘাটে যাই । সেখানে তখন উত্তপ্ত পরিস্থিতি । দেবাশিস সেই সময় গাড়িতেই ছিলেন । আচমকাই সেখানে কয়েকজন এসে সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীকে মারধর করতে থাকে । তার মধ্যে বেশ কয়েকজন তাঁকে ইট মারতে থাকে । সেই ইটের আঘাতে তাঁর চোখ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে । কোনওরকমে তাঁকে উদ্ধার করা হয় ।"
আইপিএস আরীশ বিলাল আরও বলেন, "যতক্ষণ না-পুলিশকর্মীরা সেখানে পৌঁছয়, ততক্ষণ দেবাশিস চক্রবর্তীকে তারা অনবরত মারতেই থাকে । পুলিশ না-এলে তাঁর প্রাণ চলে যেত । তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।"
হাসপাতালে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চোখের অস্ত্রোপচার চলে ওই পুলিশ সার্জেন্টের । তবে তার বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । লালবাজারে আজ কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানান, সারজেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখে রক্ত জমে গিয়েছে । আমরা এই ঘটনায় যতদূর যাওয়ার ততদূর যাব । ঘটনার দিন সেখানে কারা কারা ছিল, সেই সব ছবি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি ।
লালবাজার সূত্রের খবর, দেবাশিস চক্রবর্তী 2015 সালের ব্যাচের সারজেন্ট । তিনি কলকাতা পুলিশের ডিভিশনের সাইবার সেলে কর্মরত । এই নিয়ে তাঁর সঙ্গে কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি । যদিও লালবাজার সূত্রের খবর, এই বিষয়ে ওই সার্জেন্টের পরিবার আরও অন্য চক্ষুবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবেন । দেবাশিস চক্রবর্তীর পাশাপাশি নবান্ন অভিযানের ডিউটি করতে গিয়ে আরও অনেক পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন ।