কলকাতা, 21 অগস্ট: রাজ্যের আবেদনে সায় দিয়ে আরজি কর ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেল থেকে তাঁর পোস্ট মুছে ফেললেও নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরছেন না সুখেন্দুশেখর রায়। এমনটাই জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ৷
বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেতা ইটিভি ভারত-কে জানান, তিনি আরজি কর আন্দোলনকে যেভাবে সমর্থন করেছিলেন, সেখান থেকে এক চুলও সরছেন না। তিনি বলেন, "মানুষের আন্দোলনে আমি পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব ৷ পৃথিবীর কোনও শক্তি নেই যে, আমাকে এই আন্দোলন থেকে সরিয়ে দিতে পারে ৷" আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ কমিশনার ও আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও সিবিআই-এর জিজ্ঞাবাসা করা উচিত বলে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন সুখেন্দুশেখর রায় ৷ তারপরই লালবাজার থেকে তাঁকে নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠানো হয় ৷ কিন্তু লালবাজারে না-গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ৷
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলায় সুখেন্দুশেখর রায়ের আইনজীবী জানান, তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বার্তায় কিছু বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তাই তিনি সে অবস্থান থেকে সরে আসতে চান ৷ সে সময় পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়, এক্স হ্যান্ডেল থেকে তাঁর পোস্ট ডিলিট করার জন্য ৷ পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, তিনি সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন ৷ এরপরেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি নিজের অবস্থান থেকে তিনি সরে আসছেন ?
এ প্রসঙ্গে সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, "তাঁর 58 বছরের রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের সার্বিক প্রতিবাদ দেখেননি ৷ যেখানে মানুষ কোনও রাজনৈতিক পতাকা না-নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের মাঝরাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে এরকম একটা ঘটনার প্রতিবাদ করছেন ৷" তাঁর দাবি, আরজি করের ঘটনা তাঁর বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে ৷ এই অবস্থায় তিনি চোখ বন্ধ করে থাকতে পারেন না ৷ আমি বিবেক বর্জিত মানুষ নই ৷ অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ করা যায় না ৷ পাশাপাশি
এদিন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা ৷ তিনি মনে করেন, দেশের শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপ সঠিক পথেই নেওয়া হয়েছে ৷ এছাড়াও তিনি আরও জানান, যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আবেদন করে তিনি ৷
দলের তরফ থেকে কেউ কেউ তাঁর এই প্রতিবাদের কড়া সমালোচনা করছেন, এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, দল নিয়ে কোথাও একটি শব্দও তিনি বলেননি ৷ কাজেই এই প্রশ্নের কোনও জবাব তিনি দেবেন না। যদিও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দুশেখর রায়ের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, দলের তরফ থেকে একজন সিনিয়র লিডার হিসাবে তাঁর সোশাল মিডিয়ার বার্তায় যে ভুল তথ্য ছিল, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছিল ৷ সেটা নিয়েই বলা হয়েছে এর বাইরে কিছুই বলা হয়নি ৷