কোচবিহার, 9 নভেম্বর: উদয়ন গুহ-র নাম নিয়ে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের শাসানির অভিযোগ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এবং পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৷
অভিযোগ, হাসপাতালের ওপিডি অর্থাৎ, বহির্বিভাগে চিকিৎসকরা রোগী দেখতে দেরিতে আসছেন ৷ এমনকি জরুরি বিভাগেও অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে ৷ তারপরেই, সোজা হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে এলেন তৃণমূলের নেতারা ৷
সম্প্রতি দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর কাছে কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছিল ৷ যেখানে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সময়ে ওপিডি-তে না বসা-সহ একাধিক অভিযোগ করা হয় ৷ এমনকি রোগীদের হেনস্তার অভিযোগও উঠেছে ৷ আর তারপরেই আজ তৃণমূলের দিনহাটা ব্লকের সভাপতি বিশু ধর এবং দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী হাসপাতালে আসেন ৷ সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকেও নিয়ে যান তাঁরা ৷
অভিযোগ, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা ৷ এমনকি রোগীকে কীভাবে পরীক্ষা করবেন চিকিৎসক, তাও বলে দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের নেতাদের ! সেখানেই দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওই চিকিৎসককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ ওপিডি-তে বসা এক চিকিৎসককেও একইভাবে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷
তৃণমূল নেতা তথা দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী বলেন, "চিকিৎসকদের একাংশের কারণে, সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ৷ রাজ্য সরকারের দুর্নাম হচ্ছে ৷ সেটাই ডাক্তারবাবুদের জানাতে এসেছিলাম ৷ কাল থেকে আমাদের কর্মীরা হাসপাতালে থাকবে ৷ সব ঠিকঠাক চলছে কি না, তা আমরা নজরদারি চালাব ৷" চিকিৎসকদের দেরিতে আসার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতাল সুপার চিকিৎসক রণজিৎ মণ্ডল ৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দেরিতে আসা-সহ অন্যান্য যে অভিযোগ রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উদয়ন গুহর কাছে জমা পড়েছিল, তা তিনি কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে কেন জানালেন না ? কেনই বা তাঁর নাম করে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এবং দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে হুমকি দিলেন ? এর পিছনে কি তাহলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর পূর্ণ সমর্থন রয়েছেন ?
এ নিয়ে বিজেপির কোচবিহার জেলার সম্পাদক অজয় রায় বলেন, "এটাই তৃণমূলের কালচার ৷ তাই কারণ-অকারণ যাই থাক, হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের হুমকি দিচ্ছেন তাঁরা ৷" পুরো বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক সুকান্ত বিশ্বাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "বিষয়টি জানা নেই ৷ খোঁজ নিয়ে দেখব ৷"