কলকাতা, 4 ফেব্রুয়ারি: তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রের মন্তব্য এখন খবরের শিরোনামে ৷ বিশেষ করে সোমবার দিনভর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাঁর 'আইপ্যাক' নিয়ে করা মন্তব্য শিরোনাম হয়েছে। এই অবস্থায় আকস্মিক তাঁর একটি 'অ্যাপোলোজি লেটার' প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে সরাসরি চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ওই চিঠিটিতে গতকালের তারিখ দেখা যাচ্ছে। যেখানে কামারহাটির বিধায়ক লিখেছেন, "সাম্প্রতিককালে আমার ব্যক্তিগত ও অনিচ্ছারত দুই একটি মন্তব্য কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বিকৃতভাবে প্রকাশিত হওয়ায় সার্বিকভাবে আমাদের দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের সকলের সভানেত্রী মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মর্মাহত হয়েছেন। এর জন্য আমি লিখিতভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি এবং দলকে অনুরোধ করছি আমার ভুল বুঝে ক্ষমা করার জন্য।"
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে গতকাল মদন মিত্র যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাতে তিনি, দলনেত্রীর উপর পূর্ণ আস্থার কথা বারবার বলেছেন। তাঁকে এমনটাও বলতে শোনা গিয়েছে, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী নয়, অনুগত। আমার কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুঃখ পেয়ে থাকলে আমি রাজনীতি ছেড়ে চিরকালের জন্য বাড়িতে বসে যাব। এই বক্তব্যের পর ক্ষমা চেয়ে তাঁর 'আন-অফিসিয়াল' চিঠি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ!
উল্লেখ্য, এদিন যে চিঠিটি প্রকাশ্যে এসেছে তা সরাসরি সাদা কাগজে লেখা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে লক্ষ্য করে লেখা হলেও এই চিঠি তাঁর বিধায়ক প্যাডে লেখা নয় ৷ ফলে এর সত্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। ইটিভি ভারত এই চিঠির সত্যতা জানতে সরাসরি কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু, এ বিষয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এখন দেখার এই অবস্থায় কামারহাটির বিধায়ক এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া শেষ পর্যন্ত দেন কি না।
মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে যতদূর জানা যাচ্ছে, এ নিয়ে দলের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁকে কোনও কিছুই বলা হয়নি। তবে মদন মিত্র নিজে মনে করছেন, গত কয়েক দিন ধরে যে পর্ব চলছে, তা দলের ক্ষেত্রে অস্বস্তিকর হতে পারে ৷ সেই জন্যই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে এই চিঠি দিয়েছেন তিনি।
এদিন, মদন মিত্রের বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট বলেছেন, দলের এই বিষয়গুলি দলের অভ্যন্তরেই বললে ভালো করতেন মদন মিত্র। দলের অভ্যন্তরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে বিষয়গুলি নিয়ে জানানোর অবকাশ রয়েছে। দলের শৃংখলা রক্ষা কমিটির সদস্য ফিরহাদ হাকিমের এই বক্তব্যের পরই ক্ষমা চেয়ে মদন মিত্র চিঠি দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে ৷