মালদা, 15 মে: তিনি অধ্যাপক ৷ তৃণমূল পরিচালিত গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও ৷ সেই মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ৷ অভিযোগ, প্রায় সাড়ে 12 লক্ষ টাকা নিয়ে 2016 সালে তিনি এক মহিলাকে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়েছিলেন ৷ 15 দিন চাকরি করার পর ওই মহিলার নিয়োগপত্র ভুয়ো প্রমাণিত হয় ৷ এরপরেই টাকা ফেরতের দাবিতে মোজাম্মেলের দ্বারস্থ হন ওই মহিলার স্বামী ৷ কিন্তু টাকা ফেরত দেননি অধ্যাপক রাজনীতিবিদ ৷ বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত ৷ লোয়ার কোর্টের নির্দেশে মহিলার স্বামী সুকুমার বালোকে তিন লক্ষের কিছু বেশি টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন মোজাম্মেল ৷ কিন্তু বাকি টাকা আর তিনি ফেরত দেননি বলে অভিযোগ ৷ শুধু তাই নয়, আদালতের নির্দেশে কিছু টাকা ফেরত দিলেও সুকুমার বালোকে চিনতেই অস্বীকার করেছেন মোজাম্মেল হোসেন ৷ তাঁর দাবি, এসব বিরোধীদের চক্রান্ত ৷
গাজোলের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা সুকুমার বালোর বক্তব্য, "মোজাম্মেল হোসেন আমার স্ত্রীকে প্রাথমিকের একটি নিয়োগপত্রও দেন ৷ আমার স্ত্রী ওই নিয়োগপত্র নিয়ে কাজে যোগ দেন ৷ দিন পনেরো পর ডিআই অফিস থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় ৷ তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই নিয়োগপত্রটি ভুয়ো ৷ এরপরেই আমরা মোজাম্মেল হোসেনকে টাকা ফেরত দিতে বলি ৷ দীর্ঘদিন ঘোরানোর পর তিনি আমাদের একটি চেক দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু ব্যাংকে জমা দিলে ওই চেক বাউন্স হয় ৷ সেকথা তাঁকে জানাই ৷ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনও টাকা-পয়সা ফেরত দিতে পারবেন না ৷ অগত্যা আমরা মালদা জেলা আদালতের দ্বারস্থ হই ৷"
অভিযুক্ত মোজাম্মেল হোসেনের অবশ্য দাবি, "সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ ৷ সুকুমার বালো বলে কেউ আছে বলে আমার জানা নেই ৷ আমার ঘরে অনেকেই আসেন ৷ আমি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হওয়ার পর এখানে সবার অবারিত দ্বার ৷ এটা বিরোধীদের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ৷ এখানে বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে ৷ তাই মোজাম্মেল হোসেনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে ৷ তিনি আদালতের দ্বারস্থ হলে আমিও হব ৷ আইন আইনের পথে চলবে ৷ আইনের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস রয়েছে ৷"
যদিও সুকুমার বালোর আইনজীবী অমিতাভ মৈত্রের কথায়, "জজ আদালতের নির্দেশে মোজাম্মেল সাহেব তিন লক্ষ 22 হাজার টাকা সুকুমারকে ফেরত দিয়েছেন ৷ বাকি টাকাও অবিলম্বে মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ আমার মক্কেল জানিয়েছেন, চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি ওই টাকা নিয়েছিলেন ৷ 2022 সালের এপ্রিলে নিম্ন আদালত এই মামলার রায় দেয় ৷ এরপর মোজাম্মেল হোসেনের আপিলের ভিত্তিতে চলতি বছরের মার্চ মাসে জজ কোর্টের বিচারক লোয়ার কোর্টের রায় বহাল রাখেন ৷ মোজাম্মেল হোসেন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ৷ সম্ভবত লোয়ার কোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করতে চলেছে ৷"
আরও পড়ুন: