কলকাতা, 1 জুলাই: ধরনা এবং তার পালটা অবস্থান, দুই মিলিয়ে অধিবেশন না চলা সত্ত্বেও উত্তপ্ত রাজ্য বিধানসভা। গত কয়েকদিন ধরেই শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে বিধানসভায় ধরনা জারি রেখেছেন উপনির্বাচনের জয়ী তৃণমূলের দুই প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন। সোমবার তাঁদের সেই ধরনার চতুর্থদিনে বিধানসভার সিঁড়িতে অবস্থান শুরু করলেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের ইস্যু কোচবিহারের নারী নির্যাতন।
এদিন অগ্নিমিত্রা পলের নেতৃত্বে বিজেপির মহিলা বিধায়করা বিধানসভায় অবস্থানে বসেছেন ৷ বিজেপির বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, শিখা চট্টোপাধ্যায় ও সুমিতা সিনহা অবস্থানে বসেন। উভয় পক্ষই অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে বিধানসভায় এই কর্মসূচি নিয়েছেন বলে দাবি। জানা গিয়েছে, বিধানসভার স্পিকার উভয়পক্ষকে দুপুর দুটো পর্যন্ত ধরনায় বসার অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই মতো একপক্ষ বাবাসাহেব আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে অপরপক্ষ বিধানসভার সিড়িতে অবস্থানে বসেছে।
এদিন বিধানসভার সিড়িতে বসে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাসনে একের পর এক মহিলার অসম্মান হচ্ছে। আমরা জানতে তাই এসব কী হচ্ছে ! আইনের শাসন কোথায় ? কোথায় প্রশাসন ? এই ধরনের ঘটনা আজকের দিনেও ঘটতে পারে ভাবা যায় না !" তিনি আরও বলেন, "আমরা কোচবিহারের নির্যাতিতাকে রাজভবনে নিয়ে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।"
এদিকে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে এদিনও অবস্থানে ছিলেন তৃণমূলের দুই জয়ী বিধায়ক। পাশে দাঁড়াতে বিধানসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রী বলেন, "রাজ্যপালের এই দু'জনের কথা ভেবে দ্রুত তাঁদের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করার উচিত। মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার পর এ ধরনের বিরম্বনা আদতে জনগণ যে রায় দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে যাচ্ছে ৷"
এদিন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুই বিধায়কের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। এদিন রাজ্য বিধানসভায় প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর অধ্যক্ষ বলেন, "রাজ্যপাল শপথের বিষয়টিকে তামাশার পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করব কাল বিলম্ব না করে আজই আসুন। এই দুই বিধায়কের শপথের ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে আমি আপনাকে গেট থেকে রিসিভ করে নিয়ে আসব।" অধ্যক্ষ বলেন, "কতদিন আর এভাবে চলবে ? রাজ্যের মানুষ গোটা বিষয়টি দেখছেন। আমার মনে হয় গোটা বিষয়টা এই মুহূর্তে তামাশার পর্যায়ে পৌঁছছে।"