কলকাতা, 1 অগস্ট: ফের শহরে অঙ্গদানে নজির । এক মহিলার থেকে জীবন পেলেন তিন ব্যক্তি । মৌসুমী দে'র হার্ট পেয়েছেন গুরগাঁওয়ের এক বেসরকারি হাসপাতাল । সেখানেও ইতিমধ্যে 35 বছরের এক যুবকের শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে । এছাড়া ত্বক এবং চোখের কর্নিয়া রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে । মহিলার স্বামীর কথায়, "আমাদের দু'জনেরই ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর অঙ্গদানের । সেই থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একবার বলাতেই আমরা রাজি হয়ে যাই ।"
বছর 54-এর মৌসুমী দে বাঁকুড়ার বাসিন্দা । গত 21 তারিখ স্বামীর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠান বাড়ি যাওয়ার জন্য । স্বামীর বাইকে চেপেই যাচ্ছিলেন সেই অনুষ্ঠান বাড়ি । যাওয়ার পথে আচাকাই রাস্তায় বিশাল জোরে বৃষ্টি নামে । তারপর বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ফের বাইকে চেপে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন দম্পতি । কিন্তু সেই সময় প্রায় নিমন্ত্রণ বাড়ির কাছে পৌঁছে যাওয়ার কারণে আর হেলমেট ব্যবহার করেন না তাঁরা । আর সেটাই হল কাল ।
ওই মহিলার স্বামী তিমির কুমার দে বলেন,"বাইকের গতি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রণে ছিল । কিন্তু একটা বাক নেওয়ার সময় বাম্পারের ধাক্কাকে আমার স্ত্রী পড়ে যান । প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন । তখন আশপাশের কিছু মানুষের সহযোগিতায় আমরা তাঁকে একটি নিকটবর্তী প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে যাই ।" জানা গিয়েছে, সেখানে নিয়ে যেতেই মৌসুমীকে প্রথমে অক্সিজেন ও সেলাইন দেওয়া হয় । তার সঙ্গে 2টো ইঞ্জেকশন ও দেওয়া হয় ওই মহিলাকে । তারপরেই প্রচুর বমিও করেন তিনি । মৌসুমীর স্বামীর কথায়, "বুঝতে পারছিলাম খুব কষ্ট পাচ্ছে ওঁর । প্রচণ্ড কাঁদছিল, ওটাই শোনা আমার ওঁর গলার শেষ স্বর ।"
তারপর ওখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় বাকুড়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে সিটি স্ক্যান করা হয় তাঁর । রিপোর্টে একটা হেমারেজ ধরা পড়ে মৌসুমীর । ফলে সঙ্গে সঙ্গে ওখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয় তাঁকে । 21 জুলাইয়ের দিনকেই রাত 9টায় মৌসুমীকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে এসে পৌঁছয় তাঁর পরিবার । সেখানেও সিটি স্ক্যান করার পর একটি অস্ত্র প্রচার করা হয় তাঁর । তারপর ফের সিটি স্ক্যান করা হয় । কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষ রক্ষা হয় না । 27 তারিখ তাঁর মৃত্যু হয় । এরপরের হাসপাতালের কথায় অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার ।