দাসপুর, 23 জানুয়ারি: "আমি থানা থেকে এসেছি ৷ দাসপুর থানার বড়বাবু বাইরে গাড়িতে আছেন ৷ সোনার আংটি কিনবেন উনি ৷" সোমবার সন্ধেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের একটি সোনার দোকানে ঢোকেন ৷ আর দোকানে ঢুকে মালিককে উপরোক্ত কথাগুলি বলেন ৷ পুলিশ পরিচয় পেয়ে আর বিশেষ কিছু জানতেও চাননি দোকানের মালিক পরেশ ভৌমিক ৷ কিন্তু, সেটাই কাল হল তাঁর জন্য ৷ পুলিশ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি গাড়িতে বসে থাকা বড়বাবুকে দেখানোর জন্য দু’টি আংটি নিয়ে বাইরে বেরন ৷ ব্যস তারপর থেকেই বেপাত্তা তিনি ৷
এই ঘটনায় দাসপুর থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেছেন সোনার দোকানের মালিক পরেশ ভৌমিক ৷ তিনি জানিয়েছেন, পোশাক এবং চেহারা দেখে পুলিশ বলেই মনে হয়েছিল তাঁর ৷ সঙ্গে দাসপুর থানার বড়বাবুর নাম করায় আর বিশেষ ঘাটেননি তিনি ৷ বিশ্বাস করেই দু’টি আংটি হাতে তুলে দিয়েছিলেন ৷ আর তাতেই যত বিপত্তি ৷ যদিও, দাসপুর থানার তরফে পরেশ ভৌমিককে জানানো হয়েছে ৷ বড়বাবু দূর, থানার অন্য কোনও পুলিশ কর্মী ওনার দোকানে গয়না কিনতে বা আনতে যাননি ৷
পরেশ ভৌমিক বলেন, "সন্ধেবেলায় ওই ব্যক্তি পুলিশ কর্মী পরিচয় দিয়েই দোকানে আসেন ৷ বলেন বাইরে বড়বাবু দাঁড়ানো আছে উনি কিছু গিফটের সোনা কিনতে চান ৷ সেই মতো আংটি দেখাই ৷ উনি বলেন বাইরে যেহেতু বড়বাবু আছে তাই একবার দেখিয়ে আপনাকে ফাইনাল করছি কোনটা নেবেন ৷ এই বলে আংটি দু’টি নিয়ে বাইরে বেরন ৷ কিন্তু, বাইরে কোনও গাড়ি ছিল না ৷ সেটা দেখে আমি বাইরে বেরিয়ে দেখি, লোকটা টোটোয় উঠে চলে গিয়েছে ৷"
যদিও, দাসপুর থানার তরফে পরেশ ভৌমিককে জানানো হয়েছে, বড়বাবু বা অন্য কোনও পুলিশ আধিকারিক ও কর্মী তাঁর দোকানে সোনা কিনতে যাননি ৷ এমনকি এর আগে দাসপুর থানার কোনও পুলিশ আধিকারিক পরেশ ভৌমিকের দোকানে সোনার গয়না কিনতে যাননি ৷ তা সত্ত্বেও, কীভাবে পুলিশ পরিচয় দিতেই মেনে নিলেন দোকানের মালিক ! দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা ৷ সিসিটিভি ফুটেজে মাইক্রোফোন থাকায়, দু’জনের কথাবার্তাও স্পষ্ট শোনা গিয়েছে ৷
এ নিয়ে ঘাটালের এসডিপিও অগ্নীশ্বর চৌধুরী বলেন, "দোকানের মালিক পরেশ ভৌমিক ৷ উনি ওনার বিশ্বাসে সোনা দিয়েছেন ৷ আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি ৷ তদন্ত করে যতটুকু পেয়েছি, তার মধ্যে আমাদের কোনও পুলিশ ওনার দোকানে যায়নি ৷ উনি যাকে জিনিস দিয়েছেন, সে আমাদের পুলিশের কেউ নয় ৷ পুরো বিষয়টা তদন্ত করে দেখছি ৷"
আরও পড়ুন: