কলকাতা, 19 নভেম্বর: এবার মৃত্যুর সরকারি নথিতেও গরমিল ! রাজ্য সরকারের দুটি পোর্টালে দেখা যাচ্ছে দুই রকমের হিসেব । এক বছরে কতজন মারা গিয়েছেন, সেই হিসাবেই দেখা যাচ্ছে বিরাট অমিল । বিষয়টি নজরে আসতেই একটি পোর্টাল বন্ধ করে দিল স্বাস্থ্য ভবন । সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য ভবন এই নির্দেশ দিয়েছে । তবে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে হয়েছে চিকিৎসক মহলে । আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো নিয়ে ৷
কারও মৃত্যু হলে সরকারিভাবে দুটি পোর্টালে তার নথি রেকর্ড রাখা হয় । একটি হল জন্ম-মৃত্যুর পোর্টাল । অন্য আরেকটি 'মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথ' পোর্টাল । কেউ মারা গেলে জন্ম-মৃত্যুর পোর্টালে শুধুমাত্র ওই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় লেখা হয় । কিন্তু মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথের পোর্টালে পরিচয়পত্রের পাশাপাশি লেখা হয় ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ । এই দুই পোর্টালের মৃতের সংখ্যার হিসেবই মিলছে না ৷
জন্ম ও মৃত্যুর পোর্টালের হিসেব অনুযায়ী, 2023 সালে মারা গিয়েছেন 6 লাখ 62 হাজার 299 জন । কিন্তু ওই বছর মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথের পোর্টালের হিসাব বলছে, মৃত্যু হয়েছে 1 লাখ 35 হাজার 395 জনের । অতএব এই দুই পোর্টালের মধ্যে তথ্যগত বিরাট ফারাক রয়েছে ৷ দুই পোর্টালের মধ্যে সংখ্যার হেরফের হয়েছে 5 লাখ 27 হাজার 596 নামের ।
একই ঘটনা ঘটেছে 2022 এবং 2021 সালেও । 2022 সালে জন্ম-মৃত্যুর পোর্টালের হিসাবে, মারা গিয়েছেন 5 লাখ 84 হাজার 587 জন । কিন্তু মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথের হিসাবে সেবছর মারা গিয়েছেন 1 লাখ 834 জন । আবার 2021 সালে জন্ম-মৃত্যুর পোর্টাল অনুযায়ী মারা গিয়েছেন 5 লাখ 15 হাজার 455 জন । অন্যদিকে, মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথের হিসাবে সেবছর মারা গিয়েছেন 1 লাখ 22 হাজার 230 জন ।
এই বিস্তর ফারাক প্রকাশ্যে আসতেই বন্ধ করা হয়েছে মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথ পোর্টালটি । এই বিষয়ে চিকিৎসক তথা পূর্ব বর্ধমানের সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "যদি এই দুটি পোর্টাল একসঙ্গে করে দেওয়া হয়, তাহলে কাজের সুবিধা হবে । কারণ এই সমস্ত কাজ করতে হয় চিকিৎসকদের । যথাযথ ডেটা এন্ট্রির লোক না থাকায় এই সমস্যা তৈরি হয় । একজন চিকিৎসকের রোগী দেখার পর ডিউটির সময়ে এই জাতীয় কাজ করা অসুবিধাজনক । ফলে সরকারকে এই বিষয়গুলো দেখতে হবে ।"