কলকাতা, 3 ডিসেম্বর: আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের থেকে শুনেছেন চোর চোর স্লোগান ৷ তবে তাকে গুরুত্ব না-দিয়ে আন্দোলনকারীদের হতাশাগ্রস্ত বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সুশান্ত রায় । ইটিভি ভারত এব্যাপারে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, "পরিচয়হীনতায় ভুগছে সকলে । এই হতাশাগ্রস্ত মানুষদের কর্মকাণ্ডে আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই ।"
পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সুশান্ত রায় । উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের এই চক্ষু বিশেষজ্ঞের নাম আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলার সঙ্গে জড়িয়েছিল ৷ ঘটনার দিন অর্থাৎ, 9 অগস্ট আরজি করের সেমিনার হলের যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে সুশান্ত রায়কে দেখা গিয়েছিল ৷ এমনকি তিনি তা স্বীকারও করেছিলেন ৷ সেই ঘটনার জেরে তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের মুখোমুখিও হতে হয় ৷
গতকাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠকে তিনি উপস্থিত ছিলেন । মঙ্গলবারও তিনি বৈঠক করেন মেডিক্যাল কাউন্সিলের অফিসে । সেই সময় মেডিক্যাল কাউন্সিল অফিসের বাইরে যে অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল, তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না সুশান্ত রায় । ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "আমরা দু'বছর ধরে অনেক ভালো ভালো কাজ করেছি । এখনও অনেক ভালো ভালো কাজ করছি । আগামীতেও ভালো ভালো কাজ করে যাব । আমরা যা যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সব করেছি । গতকাল বৈঠক করেছি, আজও করেছি । গতকালের বৈঠকে অভীক জয়েন করেছিলেন । কিন্তু আজকের বৈঠকে প্রয়োজন ছিল না, তাই আমরা ওঁকে ডাকিনি ।"
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এখানেই । যে অভীক দের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ভবনের তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে ভুরি ভুরি অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই, তা কীভাবে বলছে কাউন্সিল ? এ প্রসঙ্গে সুশান্ত রায় বলেন, "স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জমা পড়েছে ঠিকই । কিন্তু কাউন্সিলে তো একটাও অভিযোগ পত্র জমা পড়েনি । এতদিন ধরে লম্ফ ঝম্প করলেন, কিন্তু একটাও চিঠি জমা পড়ল না কাউন্সিলে । কারণ কোনও প্রমাণ নেই । স্বাস্থ্য ভবন কী করছে, তা জেনে আমাদের লাভ নেই ।"
প্রসঙ্গত, সোমবারের পর মঙ্গলবারও বৈঠক হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে । সোমবার দুপুর থেকেই কাউন্সিলের অফিসের সামনে চলে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ । মঙ্গলবারও সেই অবস্থান বিক্ষোভ চলেছে । এদিন সুশান্ত রায় ছাড়াও নির্মল মাজি, কৌশিক বিশ্বাসের মতো কাউন্সিলের সদস্যরা বৈঠকে যোগ দিতে এলে তাঁদেরকে দেখে চোর চোর স্লোগান দেন উপস্থিত আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা । কাউন্সিলের অফিসে ঢোকার সময় নির্মল মাজিকে দেখে চোর চোর স্লোগান দেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা । আবার সুশান্ত রায় যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন গাড়ি করে, সেই সময় তাঁকে দেখেও ওঠে চোর স্লোগান । গাড়ি চাপড়ে ধিক্কারও জানানো হয় ৷ একই ঘটনা ঘটে চিকিৎসক কৌশিক বিশ্বাসের সঙ্গেও ।
সিনিয়র চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, "এরপর কাউন্সিল বলবে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও কোনও প্রমাণ নেই । তাই তাঁকেও আমরা ফিরিয়ে আনছি । আমাদের এটাই মনে হচ্ছে । তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না । কারণ এখন শুধু চিকিৎসক সমাজ নয়, সাধারণ মানুষও অভীক ও বীরুপাক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ।"