ETV Bharat / state

সুশান্তকে খুনের চেষ্টায় দুবাই যোগ ! গোয়েন্দাদের নজরে পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গী

কলকাতায় বসে সুশান্ত ঘোষকে খুনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল গ্যাংস্টার আদিল হুসেইন ! হামলার আগেই দেশ ছেড়ে দুবাইয়ে পালায় পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গী ৷

SUSHANTA GHOSH MURDER ATTEMPT CASE
দুবাইয়ে সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টায় জড়িত গ্যাংস্টার আদিল হুসেইন ৷ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 3 hours ago

কলকাতা, 25 নভেম্বর: কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছিল বিহারের ৷ এবার সামনে এল দুবাই যোগ ৷ উঠে এল কুখ্যাত গ্যাংস্টার আদিল হুসেইনের নাম ৷ জানা গিয়েছে, হামলার আগে কলকাতায় এসে ধৃত গুলজারের সঙ্গে ঘটনাস্থলের রেকি, হামলার দিন ও পরিকল্পনা তৈরি করেছিল আদিল ৷ আর হামলার কয়েকদিন আগেই কলকাতা থেকে দুবাই পালিয়ে যায় বিহারের এই গ্যাংস্টার ৷

লালবাজারের দাবি, বিহারের বেউরের জেল থেকে বেরিয়ে আদিল হুসেইন সোজা কলকাতায় এসেছিল ৷ ধৃত গুলজারের সঙ্গে কসবা ও শহরের বিভিন্ন এলাকার রেকি করে সে ৷ এরপর হামলার দিন ও পরিকল্পনা তৈরি করেছিল খিদিরপুরের একটি হোটেলে বসে ৷ এমনকি কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনার আগেই সে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছিল ৷ সেই মতো পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরি করিয়ে নিয়েছিল আদিল ৷

কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে জেল ফেরত আসামি এবং যার বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা রয়েছে, সে কীভাবে পাসপোর্ট করাল ও দুবাইয়ের ভিসা পেল ! বিষয়টি লালবাজারের তদন্তকারীদেরও ভাবাচ্ছে ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভুয়ো পরিচয়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে দুবাইয়ের ভিসা আদায় করেছে আদিল ! বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা ৷

লালবাজারে গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের দাবি, সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার চেষ্টার ঘটনার কয়েকদিন আগেই দেশ ছেড়ে দুবাইয়ে পাড়ি দিয়েছে আদিল ৷ এখন গোয়েন্দাদের লক্ষ্য দুবাই থেকে কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা ৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "এক দেশ থেকে অন্য দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তকে দেশে ফিরিয়ে আনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ৷ যদিও, এই ঘটনায় দুবাই পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে কলকাতা পুলিশ ৷ তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে ৷ তবে, অন্য দেশে গিয়ে তদন্ত করার নেপথ্যে প্রচুর আইনি জটিলতা রয়েছে ৷"

উল্লেখ্য, অতীতেও কলকাতা পুলিশ অন্য একটি ঘটনার তদন্তে অভিযুক্তকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে এসে বিচার প্রক্রিয়ার নিদর্শন তৈরি করেছে ৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে কে এই আদিল ?

লালবাজার সূত্রের খবর, গোয়েন্দারা বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে, আদিল মূলত বিহারের বাসিন্দা ৷ এই আদিলের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই কমবেশি অপরাধ দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত ৷ বিভিন্ন অপরাধে একাধিকবার সংশোধনাগার ঘুরে এসেছে সে ৷ তবে, বিহারের এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় জেল খাটতে হয়েছে তাকে ৷

জানা গিয়েছে, আদিল জেলে থাকাকালীন পাপ্পু গ্যাংস্টারও সেখানে ছিল ৷ এই পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গে জেলেই বন্ধুত্ব হয় আদিলের ৷ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বিহারে ফের নতুন করে একসঙ্গে অপরাধমূলক কাজ শুরু করে আদিল ও পাপ্পু গ্যাংস্টার ৷ আদিল এবং পাপ্পু গ্যাংস্টারের লোকজন একসঙ্গে বিহার পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার উপক্রম করেছিল ৷

এই সময়েই গুলজার বিহারে গিয়ে পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গে সুশান্ত ঘোষকে খুনের সুপারি দেয় বলে জানা গিয়েছে ৷ সেই মতো তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের পরিকল্পনার জন্য পাপ্পু গ্যাংস্টার গুলজারের সঙ্গে আদিলের পরিচয় করিয়ে দেয় ৷ সেটা হয়েছিল বিহারে ৷ এরপর দুই গ্যাংস্টারের লোকজন একসঙ্গে সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার পরিকল্পনা করে ৷ চলতি বছরে পুজোর ঠিক আগে, কলকাতায় চুপিসারে পা-রেখেছিল আদিল ৷ এরপর খিদিরপুরে একটি হোটেলে বেশ কয়েকদিন আত্মগোপন করেছিল সে ৷

জানা গিয়েছে, খিদিরপুরের হোটেলে বসেই গুলজার, পাপ্পু এবং আদিল সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ব্লু প্রিন্ট সাজায় ৷ পরে তাদের দলের শুটার যুবরাজ সিং-কে কলকাতায় এনে হামলা চালানো হয় ৷ কিন্তু, মোক্ষম সময়ে বন্দুক লক হয়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৷ যদিও, তার আগেই দেশ ছেড়েছিল আদিল ৷ বর্তমানে দুবাই থেকে আদিলকে ভারতে এনে তদন্ত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লালবাজারের ৷

কলকাতা, 25 নভেম্বর: কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছিল বিহারের ৷ এবার সামনে এল দুবাই যোগ ৷ উঠে এল কুখ্যাত গ্যাংস্টার আদিল হুসেইনের নাম ৷ জানা গিয়েছে, হামলার আগে কলকাতায় এসে ধৃত গুলজারের সঙ্গে ঘটনাস্থলের রেকি, হামলার দিন ও পরিকল্পনা তৈরি করেছিল আদিল ৷ আর হামলার কয়েকদিন আগেই কলকাতা থেকে দুবাই পালিয়ে যায় বিহারের এই গ্যাংস্টার ৷

লালবাজারের দাবি, বিহারের বেউরের জেল থেকে বেরিয়ে আদিল হুসেইন সোজা কলকাতায় এসেছিল ৷ ধৃত গুলজারের সঙ্গে কসবা ও শহরের বিভিন্ন এলাকার রেকি করে সে ৷ এরপর হামলার দিন ও পরিকল্পনা তৈরি করেছিল খিদিরপুরের একটি হোটেলে বসে ৷ এমনকি কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনার আগেই সে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছিল ৷ সেই মতো পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরি করিয়ে নিয়েছিল আদিল ৷

কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে জেল ফেরত আসামি এবং যার বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা রয়েছে, সে কীভাবে পাসপোর্ট করাল ও দুবাইয়ের ভিসা পেল ! বিষয়টি লালবাজারের তদন্তকারীদেরও ভাবাচ্ছে ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভুয়ো পরিচয়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে দুবাইয়ের ভিসা আদায় করেছে আদিল ! বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা ৷

লালবাজারে গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দাদের দাবি, সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার চেষ্টার ঘটনার কয়েকদিন আগেই দেশ ছেড়ে দুবাইয়ে পাড়ি দিয়েছে আদিল ৷ এখন গোয়েন্দাদের লক্ষ্য দুবাই থেকে কুখ্যাত এই গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা ৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "এক দেশ থেকে অন্য দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তকে দেশে ফিরিয়ে আনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ৷ যদিও, এই ঘটনায় দুবাই পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে কলকাতা পুলিশ ৷ তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে ৷ তবে, অন্য দেশে গিয়ে তদন্ত করার নেপথ্যে প্রচুর আইনি জটিলতা রয়েছে ৷"

উল্লেখ্য, অতীতেও কলকাতা পুলিশ অন্য একটি ঘটনার তদন্তে অভিযুক্তকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে এসে বিচার প্রক্রিয়ার নিদর্শন তৈরি করেছে ৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে কে এই আদিল ?

লালবাজার সূত্রের খবর, গোয়েন্দারা বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে, আদিল মূলত বিহারের বাসিন্দা ৷ এই আদিলের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই কমবেশি অপরাধ দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত ৷ বিভিন্ন অপরাধে একাধিকবার সংশোধনাগার ঘুরে এসেছে সে ৷ তবে, বিহারের এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় জেল খাটতে হয়েছে তাকে ৷

জানা গিয়েছে, আদিল জেলে থাকাকালীন পাপ্পু গ্যাংস্টারও সেখানে ছিল ৷ এই পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গে জেলেই বন্ধুত্ব হয় আদিলের ৷ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বিহারে ফের নতুন করে একসঙ্গে অপরাধমূলক কাজ শুরু করে আদিল ও পাপ্পু গ্যাংস্টার ৷ আদিল এবং পাপ্পু গ্যাংস্টারের লোকজন একসঙ্গে বিহার পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার উপক্রম করেছিল ৷

এই সময়েই গুলজার বিহারে গিয়ে পাপ্পু গ্যাংস্টারের সঙ্গে সুশান্ত ঘোষকে খুনের সুপারি দেয় বলে জানা গিয়েছে ৷ সেই মতো তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের পরিকল্পনার জন্য পাপ্পু গ্যাংস্টার গুলজারের সঙ্গে আদিলের পরিচয় করিয়ে দেয় ৷ সেটা হয়েছিল বিহারে ৷ এরপর দুই গ্যাংস্টারের লোকজন একসঙ্গে সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার পরিকল্পনা করে ৷ চলতি বছরে পুজোর ঠিক আগে, কলকাতায় চুপিসারে পা-রেখেছিল আদিল ৷ এরপর খিদিরপুরে একটি হোটেলে বেশ কয়েকদিন আত্মগোপন করেছিল সে ৷

জানা গিয়েছে, খিদিরপুরের হোটেলে বসেই গুলজার, পাপ্পু এবং আদিল সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ব্লু প্রিন্ট সাজায় ৷ পরে তাদের দলের শুটার যুবরাজ সিং-কে কলকাতায় এনে হামলা চালানো হয় ৷ কিন্তু, মোক্ষম সময়ে বন্দুক লক হয়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ৷ যদিও, তার আগেই দেশ ছেড়েছিল আদিল ৷ বর্তমানে দুবাই থেকে আদিলকে ভারতে এনে তদন্ত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লালবাজারের ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.