জলপাইগুড়ি, 9 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে নিয়ে এবার মুখ খুললেন ড. সুশান্ত রায়ের ছেলে ড. সৌত্রিক রায় ৷ সোমবার ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন আরজি করে ছিলাম না ।’’
সরকারি একটি অর্ডার ঘিরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটনার দিন সৌত্রিক রায়, অভীক দে ও সৌরভ পালের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে । কিন্তু সেদিন ভোরে তিনি আরজি করে ছিলেন না বলে দাবি করছেন সৌত্রিক । তাঁর দাবি, গত মাসের 8 অগস্ট বন্দেভারত ট্রেনে চেপে তিনি কলকাতায় যান । দক্ষিণ কলকাতায় নিজের দাদুর বাড়িতেই ছিলেন বলে সৌত্রিক দাবি করেছেন । তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু ভোরে রিপোর্ট করতে হবে, তাই আমাকে কাছাকাছি থাকতে হয়েছে ।’’
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য ভবনের অর্ডারে স্বাস্থ্য দফতরের 130 জনের বেশি কর্মীরা প্যারেডে গিয়েছিলেন । তিনি একা যাননি । তাই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমাকে কেন ইস্যু করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আরজি কর থেকে এসএসকেএম-এ হাঁটতে হবে ভেবেছিলাম । কিন্তু পরে গিয়ে জানতে পারি প্র্যাকটিসটা রেড রোডেই হবে । আমাদের বলা হয়, যাঁরা এসএসকেএম থেকে সোজাসুজি আসতে চান, আসতে পারেন । আবার কেউ আরজি কর থেকে আসতে চাইলে, তাঁদের জন্য বাস থাকবে ।’’
সৌত্রিক রায়ের কথায়, ‘‘আমি 8 তারিখ নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বন্দেভারত ধরে এগারোটা নাগাদ কলকাতায় পৌঁছাই ।এরপর ঠাকুমা-দাদুর দক্ষিণ কলকাতার বাড়ি যাই । কারণ, আমার মনে হয়েছে আরজি করে যাওয়া সময় নষ্ট হবে । তাই দাদুর বাড়ি থেকে প্র্যাকটিসে যাই ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আরজি করে যেহেতু একটা ঘটনা ঘটেছে, তাই আমার নামটা উঠে আসছে । আমি আরজি করের ঘটনার পর আমি ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে পারিনি । আমরাও আরজি করের ঘটনায় চাই দোষীরা শাস্তি পাক ।’’ অন্যদিকে আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বিতর্কে রয়েছে ড. সুশান্ত রায়ও ৷ সেই নিয়ে ড. সৌত্রিক রায়ের বক্তব্য, ‘‘বাবাকে নিয়ে বিতর্ক হলেও বিব্রত হই না । কারণ, অভ্যাস হয়ে গিয়েছে । যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সমালোচনা হবেই ।’’
অতীতে বিতর্ক হয়েছে সৌত্রিক রায়কে ঘিরেও ৷ সেই নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমার এমডি-তে টপার হওয়া নিয়ে যাঁরা কুৎসা রটাচ্ছেন, তা ঠিক নয় । আমি ক্লাস করেছি কি না, তা আমার ডিপার্টমেন্ট বলতেই পারবে । আমার পরীক্ষার সময় তিন জন পরীক্ষক ছিলেন । এছাড়া আমার ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ছিলেন । আমার সঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দু’জন টপারও হয়েছিলেন ।’’
এই নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘2005 সালে আইসিএসসি-তে নম্বর ছিল 92.6 শতাংশ, 2007 সালে আইএসসি-তে নম্বর ছিল 94.75 শতাংশ । 2007 সালে জয়েন্টে আমি প্রথম চান্সেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাই ।কলকাতায় মেডিক্যাল কলেজে না গিয়েই আমি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করি । বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে আসছি । এখন আমাকে এসব বলতে হচ্ছে । আমি এতদিন মুখ বুজে ছিলাম । এমডি-র ক্ষেত্রেও আমি বায়ো কেমেস্ট্রিতে পড়ি ।’’
জলপাইগুড়িতে তাঁদের যে বাড়ি রয়েছে, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে ৷ এই নিয়ে সৌত্রিক রায় বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ কিন্তু আমি জমির কাগজ দেখেছি । আমার বাবা ক্লিনিক ও রেসিডেন্ট করার জন্যই নম্বই-এর দশকে সরকারের থেকে টাকা দিয়ে জায়গাটি কিনেছিলেন । কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় এটা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে ।’’
এর আগে রবিবার সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সুশান্ত রায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন ৷ এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর ছেলে সৌত্রিক রায় ৷